জেলকোড অনুযায়ী, কারাগারে ডিভিশনের সুবিধা কে বা কারা পাবেন বা পাবেন না তা সুনির্দিষ্ট থাকলেও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সেই সুবিধা পাবেন কিনা তা নিয়ে মতবিরোধ আছে। তবে জেলকোডে সাজাপ্রাপ্ত ও বিচারাধীন আসামিদের ডিভিশন নিয়ম আলাদা বলে সুনির্দিষ্ট করা নেই।
আইনজীবীরা বলছেন, যদি তিনি ডিভিশন পাওয়ার যোগ্যতাগুলো অর্জন করেন তবে তিনি সেই সুবিধা ভোগ করতে পারবেন। খালেদা জিয়ার ডিভিশন পাওয়ার বিষয়ে আইজি প্রিজন বলেন, আদালত নির্দেশ দিলে তিনি ডিভিশন পাবেন। রবিবার দুপুর পযন্ত তিনি সাধারণ কয়েদিদের মতোই আছেন।
জেলকোড এর ৬১৭ বিধিতে বলা আছে, ‘যারা ভালো চরিত্রের অধিকারী ও অনভ্যাসগত অপরাধী; সামজিক মর্যাদা, শিক্ষা এবং অভ্যাসের কারণে যাদের জীবন যাপনের ধরন উচ্চমানের এবং যারা নৃশংসতা, নৈতিক স্খলন এবং ব্যক্তিগত প্রতিহিংসামূলক অপরাধ বা বিস্ফোরক আগ্নেয়াস্ত্র সঙ্গে রাখা, সম্পত্তি সংক্রান্ত মারাত্মক অপরাধে সাজাপ্রাপ্ত নন বা অন্য কাউকে এসব অপরাধ করতে প্ররোচিত বা উত্তেজিত করেনি তারা ডিভিশন-১ প্রাপ্তির যোগ্য হবেন।
এছাড়া বিধি ৬১৭ (২ )-এ বলা হয়েছে, ‘নাগরিকত্ব নির্বিশেষে সামাজিক মর্যাদা, শিক্ষা এবং অভ্যাসের কারণে জীবন যাপনের ধরন উচ্চমানের বন্দিগণ ডিভিশন-২ প্রাপ্তির যোগ্য হবেন। অভ্যাসগত বন্দিগণ স্বয়ংক্রিয়ভাবে এই শ্রেণির বহির্ভূত হবে না, সরকারের অনুমোদন বা পুনর্বিবেচনার শর্তে শ্রেণি বিভাজনকারী কর্তৃপক্ষকে বন্দির চরিত্র এবং প্রাক পরিচিতির ভিত্তিতে এ শ্রেণিতে অন্তর্ভুক্তির জন্য ক্ষমতা দেওয়া হবে। যেসব বন্দি ডিভিশন ১ ও ২ এর অন্তর্ভুক্ত নয় তারা তৃতীয়টির অন্তর্ভুক্ত হবেন যেখানে বলা হচ্ছে, আদালত কোনও বন্দিকে ডিভিশন ১ ও ডিভিশন ২ প্রদানের জন্য প্রাথমিক সুপারিশটি সরকারের অনুমোদন কিংবা পুনর্বিবেচনার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন এবং মন্ত্রণালয় সেটি অনুমোদন বা পুনর্বিবেচনা করবেন।
আর অনুমোদনের এসময়কালে সুপারিশকৃত যেসব সাজাপ্রাপ্ত বন্দির পূর্ববর্তী জীবনমান সাধারণের চেয়ে উন্নততর বলে ঘোষিত অথবা বিচারাধীন বন্দিকে ডিভিশন-১ বিচারাধীন বন্দির শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে, যদি তারা ভালো চরিত্রের অনভ্যাসগত অপরাধী হয় এবং অপরাধের ধরন হিসেবে ও অন্যান্য ক্ষেত্রে দ্বিতীয় শ্রেণির ডিভিশন সাজাপ্রাপ্ত বন্দি হিসেবে বিবেচিত ঘোষিত হয় তারা সেসময় দ্বিতীয় শ্রেণির ডিভিশনপ্রাপ্ত বিবেচিত হবেন।
আইনজীবী শাহেদুর রহমান গণমাধ্যমকে বলেন, ডিভিশন যিনি পাবেন জেলকোডে যেভাবে উল্লেখ আছে তাকে তার যোগ্য হতে হবে। এক্ষেত্রে সাজাপ্রাপ্ত কয়েদি বা হাজতির মধ্যকার পার্থক্য নেই। সাজা পাওয়ার পরও একজন ডিভিশন পেতেই পারেন। কেননা এই বিভাজনের বিষয়ে জেলকোডে সুনির্দিষ্ট কিছু বলা নেই।
খালেদা জিয়ার আইনজীবী সানাউল্লাহ মিয়া রবিবার সকালে কারাবিধি ৬১৭ অনুযায়ী খালেদা জিয়া ডিভিশন পাওয়ার যোগ্য উল্লেখ করে ডিভিশনের জন্য আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, ‘গত ৮ ফেব্রুয়ারি কারাদণ্ড দেওয়ার পর খালেদা জিয়া নাজিম উদ্দিন রোডের পুরাতন কারাগারে আছেন। তিনি এখনও ডিভিশন পাননি। অথচ তিনি তিনবারের প্রধানমন্ত্রী এবং একটি দলের প্রধান।
যদিও কারা মহাপরিদর্শক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দীন জানিয়েছেন, জেল কোড অনুযায়ী সাধারণ বন্দি হিসেবে কারাগারে আছেন খালেদা জিয়া। জেলকোডে প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে কোনও উল্লেখ নেই। তিনি বলেন, ‘সাধারণ বন্দি হিসেবেই তাকে খাবার দেওয়া হচ্ছে। শুধুমাত্র শুকনো খাবার, ফলমূল স্বজনরা আনলে সেগুলো অ্যালাউ করা হচ্ছে।’ বাংলাট্রিবিউন