সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির চেয়ারম্যান ও হাইকোর্টের বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম বলেছেন, শিশু আইনে বলা রয়েছে প্রতিটি থানায় একটি শিশু বিষয়ক ডেস্ক গঠন করতে হবে। আর এই হেল্প ডেস্ক এর অর্থ এই নয় যে শুধু কয়েকটা টেবিল আর চেয়ার রেখে দিলেই হয়ে গেলো। এখানে একজন সাব-ইন্সপেক্টর এর নিম্নে নয় এমন একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দিতে হবে। আর যিনি এই ডেস্কে কাজ করবেন তার মোটিভেশন এর প্রয়োজন রয়েছে।
শিশু আইন ২০১৩ এবং কার্যকর বাস্তবায়নের ওপরে বিভাগীয় পর্যায়ে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। ইউনিসেফ বাংলাদেশের সহযোগিতায় শনিবার সুপ্রিম কোর্ট মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অন চিলড্রেন রাইটস।
কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, শিশু অপরাধী থানায় আসলে তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের কার্যকর ও ফলপ্রসূ যোগাযোগ করতে হবে। আইন প্রয়োগে সহানুভূতিশীল হতে হবে। শিশুদের জবানবন্দি রেকর্ডের সময় দেখতে হবে তা আইন অনুযায়ী হচ্ছে কি-না। শিশু আদালতের পরিবেশ শিশুদের উপযোগী করতে হবে।
সভায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারক বিচারপতি মো. ইমান আলী বলেছেন, শিশু আইন অনুযায়ী শিশু আদালতের পরিবেশ শিশুবান্ধব করার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু এখনই সেটা বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি যাতে শিশু আদালতের পরিবেশটা শিশুবান্ধব করা যায়।
কর্মশালায় সুপ্রিম কোর্টের ‘স্পেশাল কমিটি অন চাইল্ড রাইটস’ এর চেয়ারপার্সন বিচারপতি ইমান আলী আরও বলেন, আইনে যা আছে তা সংশোধন না হওয়া পর্যন্ত সেভাবেই আইনের প্রয়োগ করতে হবে। নানাবিধ সমস্যার কারণে শিশু আইনের সঠিক প্রয়োগ করা যাচ্ছে না। তিনি বলেন, শিশুদের বিচারের জন্য পৃথক শিশু আদালতের প্রয়োজন। আইন অনুযায়ী আদালতের পরিবেশ শিশুবান্ধব নিশ্চিত করা না গেলে বিচারের সময় তা শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে।
পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, যখনই কোন শিশুকে আটক করা হয় তখনই অন্য দশজন অপরাধীর সঙ্গে যেরকম ব্যবহার করা হয় শিশুর সঙ্গেও সেরকম ব্যবহার করা হয়ে থাকে। আর সেখানেই আমরা ভুলটা করি। এজন্য আমাদের মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি অন চিলড্রেন রাইটস’ আয়োজিত কর্মশালায় বিচারক ও পুলিশ কর্মকর্তারা অংশ নেন। ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার এম বজলুল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদার, বিচারপতি খিজির আহমেদ চৌধুরী, ইউনিসেফ বাংলাদেশের উপপ্রতিনিধি সীমা সেনগুপ্ত প্রমুখ।