নড়াইলের বহুল আলোচিত যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূকে অ্যাসিড নিক্ষেপ করে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ ঝলছে দেওয়ার (অ্যাসিড ২/১২) মামলার রায় আগামী ৫ মার্চ ২০১৮ ইং (সোমবার) ঘোষণা করা হবে।
আদালত সূত্রে জানা যায়, মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ ও সাক্ষীর জেরা শেষে গত বছরের নভেম্বর থেকে সরকার ও আসামী পক্ষের টানা যুক্তিতর্ক শুরু হয়ে চলতি বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি তা শেষ হয়। মামলাটি অতিরিক্ত জেলা জজ নড়াইল আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট এস, এম আকিকুর রহমান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে জানান, এই মামলায় মোট ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ভিকটিম, বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকগন সহ মোট ২২ জন ইতিমধ্যে আদালতে তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার চার্জশীটভুক্ত ৪ জন আসামীর মধ্যে প্রধান আসামী ইমদাদুল হক সাগর আদালতে ১৬৪ ধারায় এ্যাসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করেছেন।
এছাড়া মামলার প্রত্যক্ষদর্শী স্বাক্ষীরাও আদালতে এ্যাসিড নিক্ষেপের সেই রোমহর্ষক ঘটনার বর্ননা দিয়েছেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আসামীদের মৃত্যুদন্ডসহ সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০১২ সালের ১০ জুন বিকাল ৩ ঘটিকার সময় নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচুড়িয়া গ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে হেলেনা খানম নমে এক গৃহবধূকে এ্যাসিড নিক্ষেপ করে সমগ্র মুখমন্ডল সহ শরিরের গুরুত্বপুর্ন অংশ এবং গোপন অংশ ঝঁলসে দেয় আসামীরা। এ ঘটনায় ঐদিনই হেলেনার পিতা শেখ হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে হেলেনার স্বামী ১। ইমদাদুল হক সাগর, শাশুড়ি ২। রোকেয়া বেগম, ননদ ৩। সুমি খানম, শশুর ৪। মোঃ আইয়ুব হোসেন মোট ৪ জন কে আসামী করে লোহাগড়া থানায় এ্যাসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫(ক)/৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। যাহার নম্বর জি আর -১৯১/১২ (লোহাগড়া), যা তৎকালিন সময়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ধারাবাহিক ভাবে এই ঘটনা প্রচারিত হতে থাকে এবং বিভিন্ন মহল থেকে ন্যায় বিচারের দাবি আসতে থাকে। মামলাটি পরবর্তিতে বিচারের জন্য এ্যাসিড ২/১২ নামে এ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে পরিচালিত হয়।
এদিকে রায় ঘোষনার তারিখ পাওয়ার পর নড়াইলে বিভিন্ন মহলে মামলাটি নিয়ে নানারকম আলোচনা শুরু হয়েছে, নড়াইলের বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন, নারীবাদী সংগঠন ও জেলা মহিলা সংস্থা এবং মহিলা অধিদফতরের কর্মকর্তারা সমাজে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে আসামীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড প্রদানের জোর দাবি জানিয়ে আসছেন।
নড়াইল থেকে কাজী মেসবাহউর রহমান (সুমন)/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম