স্বাধীনতার পর থেকেই বাংলাদেশের সর্বস্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করার চেষ্টা চলছে এবং এ ব্যাপারে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিও হয়েছে। সরকারি অফিসের নথিপত্র, চিঠির ভাষা এখন প্রায় শত ভাগই বাংলা লেখা হয়। কিন্তু রাষ্ট্রের একটি প্রতিষ্ঠানে এখনও ইংরেজির প্রাধান্য চলছে, আর সেটি হলো বিচার বিভাগ।
উচ্চ আদালতে এখনও সিংহভাগ রায় লেখা হয় ইংরেজিতে। কেন এই পরিস্থিতি?
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম বলেন, উচ্চতর আদালতে বিশেষ করে সুপ্রিম কোর্টে এখনও ইংরেজির ব্যবহার বেশি। তবে নিম্ন আদালত এখন মোটামুটি বাংলাতেই চলছে।
তিনি জানান, উচ্চতর আদালতেও এখন বাংলায় রায় দেওয়া শুরু হয়েছে। কয়েকজন বিচারক বাংলাতেই রায় দিচ্ছেন।
কিন্তু তার মতে, উচ্চতর আদালতে বিভিন্ন দেশের আইন ও বিচার নিয়ে আলোচনা পর্যালোচনা হওয়ার কারণে সেখানে বাংলায় রায় দেওয়া একটু কঠিন।
মি. হক বলেন, “যদিও প্রত্যেক বিচারক মনে করেন যে বাংলায় রায় দিতে পারলে ভালো হতো। তারা সেটা আশাও করেন। তারা চেষ্টাও করেন। কিন্তু ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও রায়টা যাতে ভালো হয় সেজন্যে তারা বাংলার বদলে ইংরেজিকেই প্রাধান্য দিচ্ছেন।”
তার মতে, বিচারকরা চান ভালো রায় দিতে। আর সেটা করতে গিয়ে রায় কোন ভাষাতে দেওয়া হচ্ছে সেটা তাদের বিবেচনায় আসে না।
ইংরেজিতে রায় দেওয়ার পেছনে আরো একটি সমস্যার কথা উল্লেখ করেন সাবেক এই বিচারপতি।
“আমাদের দেশি আইনগুলো ইতোমধ্যে বাংলা করা হয়ে গেছে। কিন্তু এই আইনগুলোকে যখন বাইরের আইনের সাথে তুলনা করা হয় সেগুলো তো ইংরেজিতে। যে কারণে রায়টা ভালো করতে গেলে নজরটা ইংরেজির দিকেই চলে যায়,” বলেন তিনি।
(বিবিসি বাংলা)