বর্তমানে ৩৩ লাখ মামলা জট রয়েছে উল্লেখ করে এর পেছনে চিকিৎসক, তদন্তকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর সমন্বয়হীনতাকে দায়ী করে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, মামলা জট না কমাতে পারলে বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের আস্থা আসবে না। জট কমলে আস্থা বাড়বে। তখনই আমরা আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হবো।
আজ মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত ন্যাশনাল জাস্টিস কো-অর্ডিনেশন কমিটির (এনজেসিসি) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ অভিযোগ করেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, সরকার মামলা জট কমিয়ে আনার বিভিন্ন উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। আমরা ‘প্রিজন অ্যাক্ট ১৮৯৪’ সংশোধনের উদ্যোগও নিয়েছি। কেননা ১২৪ বছর আগের কলোনিয়াল আইনটি আমাদের শাস্তি দেওয়ার জন্য করা হয়েছিলো। তাই আইনটি সংশোধন করে আমরা ‘প্রিজন অ্যান্ড কারেক্টাল অ্যাক্ট ২০১৮’ করতে চাইছি।
আইন ও বিচার বিভাগের সচিবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বিভাগটির যুগ্ম সচিব বিকাশ কুমার সাহা, উম্মে কুলসুম, আইজি প্রিজন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক মোখলেসুর রহমান, সুপ্রিম কোর্টের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মো. জাকির হোসেন, ইউএনডিপি’র কান্ট্রি ডিরেক্টর সুদীপ্ত মুখার্জী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিকাশ কুমার সাহা এ কমিটি গঠন সম্পর্কে বলেন, মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির জন্যই ‘এনজেসিসি’ গঠন করা হয়েছে। এর মূল কাজই হচ্ছে মামলার জটিলতা চিহ্নিতকরণ।
কমিটির প্রধান আইনমন্ত্রী। আর সদস্য থাকবেন আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, অর্থ সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব, বার কাউন্সিল প্রতিনিধি, সুপ্রিম কোর্ট বার প্রতিনিধি, আইজি প্রিজন, সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন প্রতিনিধি, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের প্রতিনিধিসহ বিচার সংশ্লিষ্টরা। তিন মাসে একটি বৈঠক করবে কমিটি। যেখানে এক গবেষক মাঠ পর্যায় থেকে তথ্য সংগ্রহ করে বৈঠকে উপস্থাপন করবেন।
ইউএনডিপি’র সহায়তায় এ কমিটি জেলা পর্যায়েও সহকারী জেলা জজের নেতৃত্বে পরিচালিত হবে।
আইজি প্রিজন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন বলেন, মামলা ঝুলে যাওয়ার অন্যতম কারণ হচ্ছে আসামিকে যথাসময়ে আদালতে উপস্থাপন করতে না পারা। একজন আসামির একইদিনে একাধিক আদালতে হাজিরা থাকে, কিংবা এক জেলার পর অন্য জেলার একদিন আগে পরে হাজিরার তারিখ থাকে। যেটা সম্ভব হয় না। তাই এ বিষয়টির সমাধান হওয়া দরকার। এজন্য আসামির ভার্চুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা করা দরকার।
অন্যদিকে মামলা ঝুলে যাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে কারাগারে কম ধারণক্ষমতা। আমাদের ধারণক্ষমতা ৩৬ হাজার ৬১৪ জনের, কিন্তু বন্দি আছে ৭৯ হাজার ৩১৫ জন।