ব্যবসায়ীদের ঘুষ না দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন, গত বছরে হাতেনাতে আমরা ২৫ জন ঘুষখোরকে ধরেছি। কাজেই আপনাদের এগিয়ে আসতে হবে। এটা ভাবলে হবে না যে হায় হায় আমরা যদি ঘুষ ধরিয়ে দিই, তাহলে আমার কাজ চিরজীবনের জন্য বন্ধ হবে। বরং আপনার কাজ চিরজীবনের জন্য স্বাভাবিক হয়ে যাবে।…’ তিনি বলেন, ‘দুদকের কোনো কোনো কর্মকর্তা ব্যবসায়ীদের হয়রানি করেন—এমন কথা কখনো কখনো শোনা যায়। আমি এ বিষয়ে দ্ব্যর্থহীনভাবে বলতে চাই, এমন কোনো ঘটনা আপনাদের নজরে এলে তা কমিশনকে জানান। আমাদের দ্বার ব্যবসায়ীদের জন্য সর্বদা উন্মুক্ত।’
আজ বুধবার দুপুরে দুদক কার্যালয়ে বিভিন্ন ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান। দুদক ও বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ‘বাংলাদেশে বিনিয়োগ ও ব্যবসাবান্ধব পরিবেশের জন্য দুর্নীতিমুক্ত সরকারি সেবা’ শীর্ষক ওই মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
সভায় বক্তব্য দেন বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী মো. আমিনুল ইসলাম, ঢাকা চেম্বার অব কমার্সের (ডিসিসিআই) পরিচালক সেলিম আক্তার খান, বাংলাদেশ-মালয়েশিয়া চেম্বারের প্রতিনিধি সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন এবং এফবিসিসিআইয়ের পরিচালক হাসিনা নেওয়াজ।
সভায় দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুদক সরকারি কার্যক্রমে পদ্ধতিগত উন্নয়নের কথা বলছে। পদ্ধতিগত উন্নয়ন ছাড়া সরকারি পরিষেবার মান উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই দ্রুত সেবা নেওয়ার নামে ঘুষ বা স্পিড মানি সহ্য করা হবে না। সরকারি সব সেবা নির্ধারিত সময়ে দিতে হবে। নির্ধারিত সময়ে সেবা দিতে না পারলে দায়ী কর্মকর্তাকেই এর ক্ষতিপূরণ দিতে হবে—এমন ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। তবে ব্যবসায়িক কার্যক্রমে তদবির ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপও কাম্য নয়।
ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির বিষয়ে চেয়ারম্যান বলেন, ব্যাংকের ঋণ নিয়ে কে খেলাপি করছে আর কে করছে না, এটা দুদকের দেখার বিষয় নয়। একটি মানুষ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে যদি টাকা না দিতে পারে, সেটা তার ও ব্যাংকের সমস্যা। কিন্তু যখন নথিপত্র জালিয়াতি করে ঋণ নেওয়া হয়, তখন সেটা দুদকের এখতিয়ারে চলে আসে।