নড়াইলের বহুল আলোচিত এ্যাসিড -২/১২ মামলার রায় ঘোষনা করা হয়েছে। যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে এসিড নিক্ষেপের দায়ে স্বামীকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ডের রায় দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে মামলার বাকি ৩ জন আসামীকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন।
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক সানা মোহাম্মদ মারুফ হোসেন সোমবার (৫ মার্চ) বেলা ৫.৩০ টায় রায় ঘোষনা করেন।
সাজাপ্রাপ্ত ইমদাদুল হক সাগর (৩০) লোহাগড়া উপজেলার পাচুড়িয়া গ্রামের আয়ুব হোসেন শেখের ছেলে। রায় ঘোষণার সময় সাজাপ্রাপ্ত ইমদাদুল হক সাগর ও খালাসপ্রাপ্তরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
মামলার বাদী পক্ষের আইনজীবী এ্যাডভোকেট এস, এম আকিকুর রহমান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকম কে জানান, এই মামলায় মোট ২৪ জন সাক্ষীর মধ্যে ভিকটিম, বাদী, তদন্ত কর্মকর্তা ও চিকিৎসকগন সহ মোট ২২ জন ইতিমধ্যে আদালতে তাদের সাক্ষ্য দিয়েছেন। মামলার চার্জশীটভুক্ত ৪ জন আসামীর মধ্যে প্রধান আসামী ইমদাদুল হক সাগর আদালতে ১৬৪ ধারায় এ্যাসিড নিক্ষেপের কথা স্বীকার করে জবানবন্দী প্রদান করেছেন। প্রতক্ষদর্শী স্বাক্ষীরাও সেই রোমহর্ষক ঘটনার কথা আদালতে বর্ণনা করেছেন। এমতাবস্থায় আমরা আসামীদের মৃত্যুদন্ডসহ সর্বোচ্চ সাজা প্রত্যাশা করেছিলাম, তারপরও আদালতের রায়ে আমরা খুশি।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরনে জানা যায়, ২০১২ সালের ১০ জুন বিকাল ৩ ঘটিকার সময় নড়াইল জেলার লোহাগড়া উপজেলার পাচুড়িয়া গ্রামে প্রকাশ্য দিবালোকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুকের দাবিতে হেলেনা খানম নমে এক গৃহবধুকে এ্যাসিড নিক্ষেপ করে সমগ্র মুখমন্ডল সহ শরিরের গুরুত্বপুর্ন অংশ এবং গোপন অংশ ঝঁলসে দেয় আসামীরা। এ ঘটনায় ঐদিনই হেলেনার পিতা শেখ হাবিবুর রহমান বাদী হয়ে হেলেনার স্বামী ১। ইমদাদুল হক সাগর, শাশুড়ি ২। রোকেয়া বেগম, ননদ ৩। সুমি খানম, শশুর ৪। মোঃ আইয়ুব হোসেন মোট ৪ জন কে আসামী করে লোহাগড়া থানায় এ্যাসিড অপরাধ দমন আইন ২০০২ এর ৫(ক)/৭ ধারায় মামলাটি দায়ের করেন। যাহার নম্বর জি আর -১৯১/১২ (লোহাগড়া), যা তৎকালিন সময়ে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াতে ধারাবাহিক ভাবে এই ঘটনা প্রচারিত হতে থাকে এবং বিভিন্ন মহল থেকে ন্যায় বিচারের দাবি আসতে থাকে। মামলাটি পরবর্তিতে বিচারের জন্য এ্যাসিড ২/১২ নামে এ্যাসিড অপরাধ দমন ট্রাইবুনালে পরিচালিত হয়ে আসছিল।
নড়াইল থেকে কাজী মেসবাহউর রহমান (সুমন)/ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডট কম