সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির নির্বাচনী প্রচারণায় আইনজীবী সমন্বয় পরিষদের (সাদা প্যানেল) কর্মী এক আইনজীবীকে গালমন্দ করেছেন বলে সমিতির বর্তমান সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
আজ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সুপ্রিমকোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের প্রবেশ মুখে নির্বাচনী প্রচারণাকালে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে।
সুপ্রিম কোর্ট বারের সদ্য অন্তর্ভুক্ত সদস্য ভুক্তভুগি আইনজীবীর নাম সুবীর নন্দী দাস।
আসন্ন নির্বাচনকে কেন্দ্র করে প্রচার-প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রার্থিরা। প্রচারণার অংশ অনুযায়ী আদালত প্রাঙ্গণে স্ব স্ব প্যানালের নামে স্লোগান দিয়ে থাকেন আইনজীবীরা। এ সময় সাদা প্যানালের এক আইনজীবী স্লোগানে বারের দুর্নীতি ও দলের চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার জেলে যাওয়া বিষয়টি উল্লেখ করে স্লোগান দিলে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন ঐ আইনজীবীকে ‘শুয়োরের বাচ্চা’ বলে গালি দেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভুগি আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস বলেন, ক্যাম্পেইন চলাকালীন বারের দুর্নীতি ও খালেদা জিয়ার জেল নিয়ে স্লোগান দিলে তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েছেন। উনি বারের সম্পাদক ঠিক আছে তাই বলে একজন জুনিয়র আইনজীবীকে গালি দিতে পারেন কি? বারের নতুন সদস্য বলে আমার সম্মান বা অধিকার কি কম?
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আবদুল্লাহ আল হারুন রাসেল বলেন, ‘নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলাকালে যদি কোন প্রার্থী আসেন তবে স্ব স্ব দলের সমর্থকেরা নিজ নিজ প্যানেলের নামে স্লোগান দিয়ে থাকেন। এ সময় ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন সেখানে আসেন এবং তখন সাদা প্যানেলের কর্মী সুবীর নন্দি দাস বারের দুর্নীতি ও খালেদা জিয়ার জেল বিষয়ক স্লোগান দিলে তিনি রাগান্বিত হয়ে গালমন্দ করেন।’
আইনজীবী সমিতির সদস্যদের সম্মানিত সদস্য বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। বাজে ভাষায় কথা বলা বা গালি দেওয়ার সুযোগ নেই জানিয়ে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য কুমার দেবুল দে বলেন, ‘যদি মাহবুব উদ্দিন খোকন এ ধরণের কথা বলে থাকেন তাহলে বার কাউন্সিলের আচরণ বিধির সুস্পষ্ট লঙ্ঘনের দায়ে তাঁর সনদও বাতিল হতে পারে।’
অভিযোগ বিষয়ে ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকনের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি গালি দেইনি, সে বারের মেম্বার কি-না জানতে চেয়েছিলাম। সে তো বারের মেম্বার না তাহলে নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে কেন?
আইনজীবী সুবীর নন্দী দাস সমিতির নতুন সদস্য মনে করিয়ে দিলে ব্যারিস্টার মাহবুব বলেন, সে তো ভোটার না, আচরণ বিধি অনুযায়ী ভোটার না হলে ক্যাম্পেইন করতে পারবে না। আমি তার বিরুদ্ধে পুলিশে রিপোর্ট করব। আচরণ বিধি লঙ্ঘনের জন্য প্রয়োজনে সনদ বাতিলের সুপারিশ করা হবে।
এদিকে এ আইনজীবীকে গালি দেওয়ায় সুপ্রিম কোর্টের অ্যাডভোকেট লাউঞ্জে এক প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় আইনজীবী সুবীর নন্দীকে গালি দেওয়ায় প্রতিবাদ জানানো হয়। সভায় উপস্থিত ছিলেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মেহেদী মিলন, আক্তার হোসেন, জাকির হোসেন, তরিকুল ইসলাম, নোমান হোসেন তালুকদার, আলী আহম্মদ, জাহিদ হোসেন হিরু, দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ।