মামলার বিচার চলাকালীন সময়ে শিশুদের ছবি ও তথ্য প্রকাশের বিষয়ে শিশু আইন-২০১৩ এর ৮১ ধারার অস্পষ্টতা দূরীকরণে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি অস্পষ্টতা দূর করে গেজেট প্রকাশের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত।
তিন আইনজীবীরা করা রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১৯ মার্চ) বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ও ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।
একইসঙ্গে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, আইন সচিব, তথ্য সচিব, মহিলা ও শিশু বিষয়ক সচিব, প্রেস কাউন্সিলের চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার হাসান এম এস আজীম। আদালতে রিট দায়ের করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী কামাল হোসেন মিয়াজী, আশফাকুর রহমান ও মোহাম্মদ মিফতাউল আলম।
পরে হাসান এম এস আজীম বলেন, আইনের ৮১ ধারায় আছে মামলা বা বিচার কার্যক্রম চলাকালে শিশুকে শনাক্ত করা যায় এমন ছবি বা তথ্য প্রকাশ করা যাবে না। কিন্তু মামলার আগে কি হবে সেটা বলা নেই। তাই এ বিষয়ে অস্পষ্টতা দূরীকরণে এ রিট দায়ের করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা চাই মামলার আগে পরে কোনো অবস্থাতেই শিশুকে শনাক্ত করা যায় এমন তথ্য বা ছবি প্রকাশ করা যাবে না। আইনের ৮১ (১) ধারাকে ৯৭ ধারায় ক্ষমতাবলে অস্পষ্টতা দূর করতে হবে। কারণ সম্প্রতি চট্টগ্রামে একটি ঘটনায় শিশুদের ছবি প্রকাশ করা হয়। এতে শিশুদের হেয় করা হয়েছে। তারা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে গেছে। তাই তিন আইনজীবীর রিটের পরিপ্রেক্ষিতে রুল জারি করেছেন আদালত।
শিশু আইন, ২০১৩ এর ৮১ (১) ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের অধীন বিচারাধীন কোনো মামলা বা বিচার কার্যক্রম সম্পর্কে প্রিন্ট বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম অথবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনো শিশুর স্বার্থের পরিপন্থী এমন কোনো প্রতিবেদন, ছবি বা তথ্য প্রকাশ করা যাবে না, যার দ্বারা শিশুটিকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শনাক্ত করা যায়।
আইনের ৯৭ ধারায় বলা হয়েছে, এই আইনের কোনো বিধান কার্যকর করার ক্ষেত্রে কোনো অস্পষ্টতা দেখা দিলে সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে, এই আইনের বিধানের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া সাপেক্ষে, এরূপ অস্পষ্টতা দূর করতে পারবে।