ফিলিস্তিনি শিশু আহেদ তামিমির প্রকাশ্য বিচার বাতিল করেছে ইসরায়েলের একটি আদালত। দেশটির সংবাদমাধ্যম হারেৎজ জানিয়েছে, ১৬ বছরের এই শিশুর ‘ভালোর জন্যই’ এই আদেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে আদালত। এই আদেশের ফলে গোপন আদালতে চলবে ইসরায়েলের সেনাদের আনা ১২টি অভিযোগের বিচার কার্যক্রম।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাকে থাপ্পড় ও লাথি মারার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ার পর আলোচনায় আসে আহেদ তামিমি। এমন দুঃসাহসিকতা দেখানোয় গত ডিসেম্বরে মা-সহ তাকে গ্রেফতার করে ইসরায়েলি সেনারা। জানুয়ারির শুরুতে তার বিরুদ্ধে ১২টি অভিযোগ দায়ের করা হয়। এরমধ্যে রয়েছে ইসরায়েলি সেনাকে লাঞ্ছিত করা, তাদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়া এবং পাথর ছোড়ার মতো অভিযোগ। ওই শিশু হয়ে উঠেছে ফিলিস্তিনি জনগণের মুক্তি আন্দোলন ও তৃতীয় ইন্তিফাদার প্রতীকী চরিত্র।
তামিমির বিচার প্রকাশ্য আদালতে চলতে থাকলেও গত মাসে ইসরায়েলে সামরিক সামরিক আদলতের বিচারক সব সাংবাদিককে আদালত কক্ষ ত্যাগ করার নির্দেশ দেন। মধ্যপ্রাচ্যের সংবাদ পর্যবেক্ষণকারী ব্রিটিশ ওয়েবাসইট মিডলইস্ট মনিটর জানিয়েছে, গত সপ্তাহে ইসরায়েলের সামরিক প্রসিকিউটররা আদালতকে জানান, তামিমির প্রকাশ্য বিচারে তাদের কোনও আপত্তি নেই। তবে পরে জানানো হয়, শিশুটির ভালোর জন্যই গোপন আদালতে চলবে শিশুটির বিচারের কার্যক্রম।
এই আদেশের ব্যাখ্যায় কর্নেল নেতানেল বেনিসো বলেন, আইনি কাঠামোর মধ্যে তামিমির পক্ষে যুক্তি উপস্থাপনের সত্যিকারের সুযোগ দেওয়ার ইচ্ছা থেকেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এসব প্রক্রিয়া সাধারণ মানুষকে উপস্থিত থাকতে না দেওয়া স্বচ্ছ বিচার প্রক্রিয়ার অন্যতম মূল বিষয়।
পুলিশি হেফাজতে থাকা অবস্থায় এখন পর্যন্ত চারবার পেছানো হেয়েছে তামিমির বিচার। বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন মানুষের সমর্থন পাচ্ছেন তামিমি। আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থা, ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এমনকি জাতিসংঘও তার মুক্তি দাবি করেছে। তার মুক্তির জন্য অনলাইন পিটিশনে স্বাক্ষর করেছে ১৭ লক্ষাধিক মানুষ।
ফিলিস্তিনি গ্রাম নবি সালেহর বাসিন্দা হিসেবে তামিমির পরিবারের আন্তর্জাতিক পরিচিতি রয়েছে। ফিলিস্তিনি মুক্তি আন্দোলনের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে সক্রিয় এই পরিবারের সদস্যরা। তামিমিকে আটকের পর থেকেই তাদের পরিবারের ওপর ইসরায়েল পুলিশের হয়রানি অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি করেছে তার পরিবার।
এদিকে টাইমস অব ইসরায়েলের খবরে জানানো হয়েছে, আটক হওয়ার পর গত সোমবার কারাগারে প্রথমবারের মতো তামিমি ও তার মায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন তার বাবা বাসেম তামিমি। ৪৫ মিনিট ধরে তারা কারাগারের অভ্যন্তরের কাচের দেওয়ালের দুই পাশ থেকে টেলিফোনে আলাপ করেন। পরে বের হয়ি তিনি সাংবাদিকদের জানান, দুজনেই মানসিকভাবে অনেক চাঙ্গা আছেন।