যুক্তরাষ্ট্রে সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বন্দুক হামলার পর দেশটির প্রচলিত অস্ত্র আইন সংস্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করেছে লাখো মানুষ।
বিবিসি জানায়, গতকাল শনিবার কয়েকটি ছাত্রসংগঠনের ডাকা ‘জীবনের জন্য শোভাযাত্রা’ শীর্ষক এই বিক্ষোভ কর্মসূচিতে প্রায় পাঁচ লাখের মতো মানুষ অংশ নেয়। এ সময় সারা দেশ থেকে আসা বিক্ষোভকারীরা রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে এসে জড়ো হন।
মার্কিন জনগণের সঙ্গে একাত্মতা জানিয়ে একই সময়ে লন্ডন, এডিনবার্গ, জেনেভা ও সিডনিতেও বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে।
গত মাসে ফ্লোরিডার পার্কল্যান্ডে একটি স্কুলে বন্দুকধারীর হামলায় ১৭ জন নিহত হবার পর থেকেই দেশটিতে অস্ত্র আইন কঠোর করার দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ চলে আসছে।
ভীড়ের মাঝ থেকে একটু পর পর ‘আর নয় এনআরএ’, ‘আর নয় অস্ত্র’ স্লোগানে মুখরিত হচ্ছিল চারপাশ। এর মাঝেই ফ্লোরিডা হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া কয়েকজন তাদের হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া বক্তব্য রাখেন। ভিক্টোরিয়া গোনজালেজ জানান, ভবিষ্যৎ জীবনসঙ্গী হিসেবে বেছে নেয়া বন্ধুকে ১৪ ফেব্রুয়ারি ভালোবাসা দিবসেই কীভাবে হামলাকারীর বন্দুকের গুলিতে হারিয়েছেন তিনি।
তার মতো আর কাউকে যেন তার ভালোবাসার মানুষকে এভাবে হারাতে না হয় সেজন্যই এই আন্দোলনে নেমেছেন ভিক্টোরিয়া। অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন-মার্চ ফর আওয়ার লাইভস-যুক্তরাষ্ট্র-ফ্লোরিডা
পার্কল্যান্ডের আরেক শিক্ষার্থী ডেলানি টার বলেন, ‘আমরা আমাদের নিহত বন্ধুদের জন্য লড়াই চালিয়ে যাবো।’
এছাড়া নিজে বা পরিবার অস্ত্র সহিংসতার শিকার হয়েছে, এমন অনেকে কথা বলেন মার্চ ফর আওয়ার লাইভস মঞ্চে। তাদের মধ্যে ছিল ১০/১১ বছরের শিশুরাও। নাওমি ওয়াডলার নামে ভার্জিনিয়ার এমনই এক মেয়ে নিজেদের হারানোর বেদনার কথা তুলে ধরে।অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন-মার্চ ফর আওয়ার লাইভস-যুক্তরাষ্ট্র-ফ্লোরিডা
কঠোর অস্ত্র আইনের সমর্থনে মানুষকে আরও বেশি আকৃষ্ট করতে এ আয়োজনে গান গেয়ে সবাইকে উজ্জীবিত করেছেন আরিয়ানা গ্রান্দে, মাইলি সাইরাস, লিন-ম্যানুয়েল মিরান্ডা ও জেনিফার হাডসনের মতো বহু শিল্পী। ওয়াশিংটনে ইউএস ক্যাপিটল ভবনের সামনে তৈরি মঞ্চে পারফর্ম করেন তারা।
শিক্ষক, শিক্ষার্থীর পাশাপাশি বিভিন্ন বয়স ও শ্রেণিপেশার জনগণ এ বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি এডিনবার্গ, লন্ডন, জেনেভা, সিডনি এবং টোকিওতেও এ আহ্বানকে সমর্থন জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল হয়।অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন-মার্চ ফর আওয়ার লাইভস-যুক্তরাষ্ট্র-ফ্লোরিডা
মার্চ ফর আওয়ার লাইভস আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য দেশে ৮শ’রও বেশি এ ধরনের বিক্ষোভ কর্মসূচি হওয়ার কথা রয়েছে।