চট্টগ্রামে নীলস -এর লিগ্যাল এওয়ারন্যাস প্রোগ্রাম

চট্টগ্রামে নীলস -এর ‘লিগ্যাল এওয়ারন্যাস প্রোগ্রাম’ অনুষ্ঠিত

 

নীলস বাংলাদেশের আইনি সহায়তা এবং সচেতনতামূলক কার্যক্রমের অংশ হিসেবে নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপ্টার এর উদ্যোগে অপর্নাচরণ সিটি কর্পোরেশন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৯ম এবং ১০ম শ্রেণীর ৪০০ জনেরও বেশি ছাত্রীর অংশগ্রহণে উক্ত স্কুলে “লিগ্যাল এওয়ারন্যাস প্রোগ্রাম” গতকাল শনিবার (১২ মে) অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সাধারণ কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে আইন ও অধিকার বিষয়ক সচেতনতা তৈরির মাধ্যমে আইনের প্রতি আস্থাশীল এবং সমৃদ্ধ সমাজ বিনির্মানের লক্ষ্যে নীলস বাংলাদেশ ‘লিগ্যাল এওয়ারনেস প্রোগ্রাম’ এর কার্যক্রম চালু করে এবং নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপটার এবং আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের প্রত্যক্ষ উদ্যোগে এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো আইনি সচেতনতামূলক প্রোগ্রাম সফলভাবে আয়োজন সম্পন্ন করতে সমর্থ হয়েছে।

প্রোগ্রামের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু হয় অপর্ণাচরণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রধান শিক্ষিকা মিসেস জারিকা বেগমের শুভেচ্ছা বক্তব্যের মাধ্যমে। তিনি প্রোগ্রাম উদ্বোধন ঘোষণা করেন এবং আইনের শিক্ষার্থীদের আইনি সচেতনতামূলক এ ধরনের প্রোগ্রাম আয়োজন করার উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং শিক্ষার্থীদের অধিকার সচেতন হবার আহ্বান জানানোর পাশাপাশি সকলকে আইনের প্রতি আস্থাশীল নাগরিক হিসেবে বেড়ে ওঠার উদাত্ত আহ্বান জানান।

উদ্ভোধনী পর্ব শেষে প্রোগ্রামের মূল কার্যক্রম শুরু হয়। চারজন বক্তা বাল্যবিবাহ, যৌতুক প্রথা, ইভটিজিং, দেনমোহর এবং সাইবার অপরাধ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন।

প্রথমেই যৌতুক প্রথা, এই প্রথার সামাজিক কুফল, আইনি প্রতিকার এবং সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ বিষয়ক বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এইচ. এম. মাহবুব আল মাহাদি।

দ্বিতীয় বক্তা হিসেবে দেনমোহর সম্পর্কে বক্তব্য রাখেন নীলস বাংলাদেশের ট্রেজারার মোহাম্মদ সাজ্জাদ। তিনি মুসলিম বিবাহের অন্যতম শর্ত এবং নারীদের অধিকার হিসেবে দেনমোহর এর গুরুত্ব সম্পর্কে বলেন এবং এই অধিকার সম্পর্কে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

তৃতীয় বক্তা হিসেবে ‘ইভটিজিং এবং বাল্যবিবাহ’ বিষয়ের ওপর বক্তব্য রাখেন নীলস বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট (ইভেন্টস্) এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ মামুন। তিনি নারী জীবনের সবচেয়ে বাজে এবং ভয়ানক অভিজ্ঞতা হিসেবে ‘ইভটিজিং’কে চিহ্নিত করে এর সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলেন এবং একজন মেয়ে বা নারীর জীবনে ইভটিজিংয়ের কারণে যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ে তা আলোকপাত করার পাশাপাশি সকলকে এই সামাজিক ব্যাধির বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার এবং আইনের প্রতি আস্থাশীল হওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি বাল্যবিবাহের কুফল, প্রতিকার, শাস্তি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করেন এবং এটি বন্ধে সামাজিক ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা তৈরির লক্ষ্যে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ বক্তা হিসেবে ‘সাইবার ক্রাইম’ বিষয়ে ছাত্রীদের সচেতনতামূলক ধারণা দেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম শাকিল।

প্রোগ্রাম পরিচালনায় সঞ্চালক হিসেবে ছিলেন আনিকা রিয়া এবং সার্বিক সহযোগিতায় ছিলেন নীলস সিইউ চ্যাপটার এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের শিক্ষার্থীরা।

এই প্রোগ্রাম সুচারুরূপে পরিচালনা ও সফলতার জন্য নীলস বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করা হয় মোহাম্মদ সাজ্জাদ , মুহম্মদ মামুন, আতিকুল ইসলাম শাকিল , ফাহমিদা বাশার প্রেমা, নিলুফার ইয়াসমীন, এইচ এম মাহবুব আল মাহদী , আনিকা রিয়া , তানভীর কায়সার অনিন্দ্য , মোহসিনুল ইসলাম সাব্বির, সিনান খান, সাবিত কায়েস রাহাত, মহিমা শাওন , ফাহিমা মজুমদার হিমা ও ফাতিমা জাহরা আহসান রাইসাকে, যাদের উদ্যম ও প্রয়াস আজকের প্রোগ্রামের সফলতার মূলে কাজ করেছে।

এছাড়াও নীলস বাংলাদেশ কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে অপর্নাচরণ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ ও অন্যান্য শিক্ষক- শিক্ষিকাগণকে যাদের সাহায্য প্রোগ্রাম সুন্দরভাবে আয়োজনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

উল্লেখ্য যে, ছাত্রীদের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়ে অপর্নাচরণ স্কুলের কর্তৃপক্ষ নীলস চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চ্যাপটার টিমকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য এ ধরনের আরো একটি আইনগত সচেতনতা বিষয়ক প্রোগ্রাম আয়োজন করার প্রস্তাব করেছেন এবং সম্পূর্ণ আয়োজনকে সাধুবাদ জানিয়েছেন।

আইনের শিক্ষার্থী হিসেবে এবং দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আইন বিষয়ক সচেতনতা তৈরি নিঃসন্দেহে একটি নৈতিক এবং পবিত্র দায়িত্ব এবং এ দায়িত্ব পালনে নীলসের এ কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার রাখে।