সুনামগঞ্জ জেলার ছাতকে লাফার্জ সিমেন্ট কারখানার মাধ্যমে ফসলী জমির মাটি কাটা ও পরিবেশের কী কী ক্ষতি করা হচ্ছে তা তদন্ত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে লাফার্জ সিমেন্ট কারখানা কর্তৃক ফসলী জমির মাটি কর্তন এবং নদীর পানি ও বায়ু দূষণ রোধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত।
এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে আজ মঙ্গলবার (১৫ মে) হাইকোর্টের বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন।
পাশাপাশি বিষয়টি তদন্ত করার জন্য পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের নেতৃত্বে একিটি কমিটি করে দিয়েছেন আদালত। পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালকের সঙ্গে পরিবেশ অধিদফতর সিলেটের পরিচালক ও সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসককে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে কমিটিকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
আগামী চার সপ্তাহের মধ্যে পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ অধিদফতরের মহাপরিচালক, সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক, ছাতক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
আদালতে রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রাফসান-আল-আলভি। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া ও অ্যাডভোকেট আশিকুজ্জামান ইনজু।
পরে অ্যাডভোকেট রাফসান-আল-আলভি সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার ট্যাঙ্গারগাঁও গ্রামে লাফার্জ সুরমা কারখানার সিমেন্ট উৎপাদন হয়। এই কারখানার মাধ্যমে ওই এলাকায় ফসলী জমির মাটি কর্তন করা হচ্ছে। এছাড়া ওই এলাকার বায়ু দূষণের ফলে সাধারণ মানুষের শ্বাস-প্রশ্বাসে সমস্যা হচ্ছে এবং সুরমা নদীর পানি দূষিত হচ্ছে।
আইনজীবী জানান, ২০১০ সালে পরিবেশ দূষণের অভিযোগে ভারতের মেঘালয় রাজ্যে লাফার্জ-সুরমা সিমেন্ট কারখানার উৎপাদন বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। এরপর বাংলাদেশে এই কারখানা উৎপাদন শুরু করেন। বিষয়টি আদালতে উপস্থপন করা হয়েছে।
এসব কারণ দেখিয়ে গত ১২ মার্চ স্থানীয় ‘সিবিক এনভায়রনমেন্টাল অ্যান্ড ইয়ুথ ফোরাম’ নামে একটি নাগরিক সংগঠন রিটটি দায়ের করেন। সেই রিটের পরিপ্রেক্ষিতেই আদালত আজ এই আদেশ দিলেন।