স্বামীর বেতন জানার অধিকার স্ত্রীর রয়েছে বলে রায় দিয়েছেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্ট। সোমবার টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের এই রায়কে তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে অভিহিত করা হচ্ছে।
আলাদা থাকা এক স্ত্রীর আপিল আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চ তাঁর রায়ে স্বামীর বেতন কত, তা জানার অধিকার স্ত্রীর রয়েছে মর্মে মত দেন।
স্বামীর বেতনের রসিদ (পে স্লিপ) চেয়ে আদালতে আবেদন করেছিলেন ওই নারী। কিন্তু হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চের আদেশের আগে ওই নারীর আবেদন নিম্ন আদালত ও হাইকোর্টের একক বেঞ্চে নাকচ হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে আদালত তাঁর আদেশের পক্ষে ব্যক্তির গোপনীয়তার অধিকারের যুক্তি দেন। আদালত বলেন, গোপনীয়তার অধিকার বলে কোনো ব্যক্তির বেতনের তথ্য অন্য কারও কাছে প্রকাশ করা যাবে না।
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, পবন জৈনের স্ত্রী সুনীতা জৈন আলাদা থাকেন। তিনি ভরণপোষণ ভাতা বাবদ স্বামীর কাছ থেকে ৭ হাজার রুপি করে পেয়ে আসছিলেন। একপর্যায়ে সুনীতা তাঁর স্বামীর সঠিক বেতন জানতে আগ্রহী হন। কারণ, সুনীতার মনে হচ্ছিল, তাঁর স্বামীর বেতন মাসে দুই লাখ রুপির বেশি। আর তেমনটা হলে তিনি ভরণপোষণ বাবদ তাঁর স্বামীর কাছ থেকে আরও বেশি অর্থ পাওয়ার দাবিদার। এই প্রেক্ষাপটে সুনীতা তাঁর স্বামীর বেতনের রসিদ চেয়ে জেলা আদালতে আবেদন করেন। নিম্ন আদালতে তাঁর আবেদন নাকচ হয়। এবার সুনীতা তথ্য অধিকার আইনের দ্বারস্থ হন। এই আইনের অধীনে তিনি তাঁর স্বামীর কর্মস্থল থেকে বেতনের তথ্য জানার চেষ্টা করেন। যথারীতি ব্যর্থ হন তিনি।
পরে সুনীতা কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনে যান। কমিশন সুনীতার আবেদন গ্রহণ করে পবনের প্রতিষ্ঠানকে বেতনের রসিদ সরবরাহ করতে আদেশ দেয়। এই আদেশ হাইকোর্টের একক বেঞ্চে চ্যালেঞ্জ করেন পবন। হাইকোর্টের একক বেঞ্চ কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনের আদেশ বাতিল করেন। এই আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করেন সুনীতা। আপিলের শুনানি নিয়ে হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ আদেশ দেন। হাইকোর্টের একক বেঞ্চের আদেশ বাতিল করা হয়।
হাইকোর্টের দ্বৈত বেঞ্চ বলেছেন, সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়ের আলোকে হাইকোর্টের একক বেঞ্চ আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু সুনীতার মামলাটি ভিন্ন। এই মামলার বাদী বিবাদীর স্ত্রী। তিনি তাঁর স্বামীর সঠিক বেতন জানতে চেয়েছেন। এই অধিকার স্ত্রীর আছে।