বাসে নারীদের যৌন হয়রানির ঘটনা বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন ঘটছে এই ঘটনা। দুএকটি ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলেও বেশিরভাগ চাপা পড়ে যাচ্ছে। সাহসী কিছু নারী প্রতিবাদ করলেও বাকিরা লজ্জা ও সম্মানের ভয়ে মুখ খুলছেন না, অভিযোগও করছেন না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। ফলে এসব ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয়েই চলেছে। তাই লোকাল বা দূরপাল্লার বাসগুলোতে নারীরা কতটা নিরাপদ সেই প্রশ্নটা থেকেই যাচ্ছে।
সর্বশেষ গতকাল শনিবার (২ জুন) দুপুরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যামেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ (এআইইউবি) -এর এক শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দেওয়ান পরিবহন নামের সেই বাস থেকে লাফ দিয়ে নিজেকে রক্ষা করেছেন বলে দাবি করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আফরিনা জাহান। বিষয়টি নিয়ে এআইইউবি শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমেও বইছে সমালোচনার ঝড়।
দেওয়ান পরিবহনের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ নতুন নয়। এর আগে ১৫ মে দুপুরে রাজধানীর ফার্মগেট এলাকায় দেওয়ান পরিবহনের একটি বাসের হেলপার ও চালকের হাতে যৌন হয়রানির শিকার হন তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষার্থী। ঘটনার দিন মেয়েটির পরিবার এক গণমাধ্যমে অভিযোগ করলে বিষয়টি নজরে আসে। পরদিন ওই শিক্ষার্থীর মা ও ভাইকে থানায় যেতে বলে পুলিশ। এক পর্যায়ে বাসের মালিক এসে তাদের কাছে ক্ষমা চান বলে জানিয়েছে ওই মেয়েটির পরিবার। তবে এ ঘটনায় সম্মানের ভয়ে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে রাজি হননি মেয়েটির পরিবার।
বাসে নারীদের নিরাপত্তার বিষয়টি ভাবিয়ে তুলেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবহন মালিকদের। বিভিন্নভাবে পরিবহন শ্রমিকদের বোঝানো হচ্ছে, নারীদের হয়রানি থেকে দূরে থাকার জন্য। একই সাথে যেসব শ্রমিকের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠছে, পরিবহন মালিকরা তাদেরকে চাকরি থেকে অব্যাহতিও দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।
পরিবহন ব্যবসায়ীরা বলছেন, এসব ঘটনা তাদেরকে লজ্জায় ফেলেছে। এ নিয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে মালিক পক্ষের দফায় দফায় মিটিং ও কাউন্সিলিং চলছে। জানিয়ে দেওয়া হচ্ছে, এমন ঘটনায় দায়ী হলে তাকে চাকরিচ্যুত করা হবে। এত সব ব্যবস্থা ও পদক্ষেপের পরও কেন এমন ঘটনা ঘটছে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না বাস মালিকরা।