চলতি বছরের ছয় মাসে (জানুয়ারি থেকে জুন) ২ হাজার ৩৩টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছে। বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরামের পক্ষ থেকে এক পর্যবেক্ষণে এই তথ্য উঠে এসেছে। জাতীয় পর্যায়ে শিশুদের নিয়ে কাজ করে এমন ২৬৯টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থার (এনজিও) একটি জাতীয় নেটওয়ার্ক বাংলাদেশ শিশু অধিকার ফোরাম।
ফোরামের পক্ষ থেকে জানানো হয়, সার্বিক শিশু অধিকারে চলতি বছরের পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। জানুয়ারি-জুন এই ৬ মাসের জাতীয় দৈনিক পত্রিকার সংবাদ পর্যালোচনা করে নেটওয়ার্কটি দেখেছে, মোট ২ হাজার ৩৩টি শিশু বিভিন্ন ধরনের সহিংসতা ও নির্যাতনের শিকার হয়, যাদের মধ্যে ১ হাজার ৩৬টি শিশু বিভিন্ন ধরনের অপমৃত্যুর শিকার। যৌন নির্যাতনের শিকার ৪৭৭টি শিশু।
শিশুর প্রতি এই সহিংসতা ও নির্যাতন গত বছরের তুলনায় এ বছরের প্রথম ৬ মাসে ২৬ শতাংশ বেশি। ২০১৭ সালের প্রথম ৬ মাসে ১ হাজার ৪৯৬টি শিশু হত্যা, ধর্ষণসহ বিভিন্ন রকমের সহিংসতার শিকার হয়।
এ বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ১ হাজার ৩৬ শিশুর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়, যার মধ্যে হত্যার শিকার২১৬ শিশু, অত্মহত্যা ১৭০, সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৫৮, পানিতে ডুবে ২৩৩ ও অন্যান্য কারণে ৫৯ শিশু মারা গেছে। হত্যার শিকার হওয়া ২১৬ শিশুর মধ্যে অপহরণের পর হত্যা করা হয় ১৬, পিতা-মাতার হাতে হত্যা ৩২, ধর্ষণের পরে খুন হয় ৩৯ ও শারীরিক নির্যাতন করে হত্যা করা হয় ২জন শিশুকে।
এদিকে ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটে ৪৭৭ টি, যার মধ্যে ৩৫১ শিশুকে ধর্ষণ, ধর্ষণের চেষ্টা ৪৩, যৌন হয়রানি ও ইভটিজিং ৭৭ ও পর্নোগ্রাফির শিকার হয়েছে ৭ জন শিশু। ধর্ষণের শিকার ৩৫১ শিশুর মধ্যে গণধর্ষণের শিকার হয় ৫৩, প্রতিবন্ধী ধর্ষণের ঘটনা ১৪টি ও ধর্ষণের পর ৪০ শিশুকে হত্যা করা হয়। ৬ জন শিশু ধর্ষণের শিকার হয়ে আত্মহত্যা করে।
অপহরণের শিকার হয় ৮১ শিশু, নিখোঁজ ১৩৩ ও নিখোঁজ হওয়ার পর উদ্ধার হয় ১০৫ শিশু। অপহরণের পর হত্যা করা হয় ১৭টি শিশুকে এবং ৬৩ জন শিশুকে নিখোঁজের পর মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
শারীরিক নির্যাতনের শিকার ৮৩ জন শিশুর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নির্যাতনের শিকার হয়৬৯ জন শিশু। এ ছাড়া গত বছরের প্রথম ৬ মাসের চেয়ে এ বছর বাবা-মায়ের হাতে শিশু হত্যার ঘটনা বেড়েছে ৮টি।