দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার আইনজীবী ও দলটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন বলেছেন, ‘বেগম খালেদা জিয়ার মামলা নিয়ে সরকার খুব ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। খালেদা জিয়ার জামিন হলে সেই জামিনকে কিভাবে রোধ করবে সেটা নিয়ে ব্যস্ত থাকে। ১/১১-এর কথা আপনাদের মনে আছে? সেই সময় যে অবস্থায় চলতো, আমরা তার চাইতে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আছি।’
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার সাজা বাড়ানোর জন্য দুদকের করা আপিলসহ পৃথক তিনটি আপিলের ওপর শুনানির জন্য হাইকোর্ট আগামী ৮ জুলাই দিন ঠিক করার পর সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
জয়নুল আবেদীন বলেন, একটি রাজনৈতিক উদ্দেশপ্রণোদিত মামলা, সেই মামলায় পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছিল। সেই মামলাটি শুনানি করার জন্য সরকার ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে। আমরা আগেও বলেছি এখনো বলছি, যেখানে লাখ লাখ আপিল পেন্ডিং, যেখানে ডেথ রেফারেন্স পেন্ডিং, সমস্ত মামলা রেখে সরকার এ মামলাটি শুনানি করতে ব্যতিব্যস্ত হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, আপনারা দেখেছেন, অ্যাটর্নি জেনারেল কত উৎসুক। এ রকম যদি সরকারের পক্ষে উনি সব আপিল, ডেথ রেফারেন্সে শুনানির জন্য উপস্থিত থাকতেন, তাহলে আমরা বুঝতাম তিনি প্রকৃতপক্ষে দেশের মানুষের কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করেছেন এবং কাজ করতে চান। এখনে তিনি শুধুমাত্র বেগম খালেদা জিয়ার মামলা শুনানি করার জন্য ব্যতিব্যস্ত হয়ে যান।
খালেদার এ আইনজীবী বলেন, মামলাটি শুনানির জন্য আজ দিন ধার্য ছিল, গতকাল আমরা একটি লিখিত আবেদন করে মামলাটি শুনানি মুলতবির জন্য আবেদন করেছি।
মুলতবি চাওয়ার ব্যাখ্যায় তিনি বলেন, যে আদেশটি আপিল বিভাগ দিয়েছে সেই আদেশের একটি অংশ নিয়ে আমরা একটি রিভিউ আবেদন করেছি। সেটি হচ্ছে এই যে, ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আপনি নিষ্পত্তি করতে বলছেন সেটা যথাযথ হয়নি।
এ বিষয়ে জয়নুল আবেদীন বলেন, এ আদেশটা যদি থাকে তাহলে অরাজকতা তৈরি হবে। এ জন্য আমরা রিভিউ আবেদনটি করেছি। সেই আবেদনের শুনানি পর্যন্ত আমরা মুলতবি চেয়েছি। আদালত আমাদের আবেদন শুনেছেন। অ্যাটর্নি জেনারেল কতগুলো অবাস্তব আরগুমেন্ট করেছেন। একটি খুব আপত্তিকর কথা বলেছেন যে, আমরা এ মামলাটি শুনানি করতে চাই না। এটা আমরা আপত্তি দিয়েছি। আদালত সব কিছু পর্যবেক্ষণ করেছেন। উভয় পক্ষের আরগুমেন্ট শুনেছেন। আমাদের আবেদনটি নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন। এটা খারিজ করে দেননি। আগামী রোববার (৮ জুলাই) ২টা পর্যন্ত এ মামলাটি স্থগিত করেছেন।
তিনি আরও বলেন, এই সময়ের (৮ জুলাই) মধ্যে আপিল বিভাগ যদি কোনো আদেশ দেন, পরবর্তীতে আদালতে আমরা দেব। ওই দিন যদি নতুন কোনো কারণ উদ্ভাব হয় তখন সেটা দেখা যাবে। আজকে কোনো শুনানি হয়নি, আগামী রোববার আবার শুনানি।
জয়নুল আবেদীন বলেন, খালেদা জিয়ার মামলার নিয়ে এক দিকে জামিনের আদেশ দেন। সেটা আবার উনারা স্থগিত করেন। এটা কোন দেশে কোন যুগে আছি আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানে না। ১/১১ এর কথা আপনাদের মনে আছে? সেই সময় যে অবস্থায় চলতো, আমরা তার চাইতে শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে আছি। এটাও ইনশা-আল্লাহ কেটে যাবে।