মাদক মামলার চার্জশিট থেকে এক ইয়াবা কারবারির নাম বাদ দেয়ার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ করা হয়েছে কি না, তার ব্যাখ্যা দিতে পুলিশের চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) এস এম মনির-উজ-জামান, রামু থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে মাদক মামলায় ইয়াবা কারবারির নাম চার্জশিটে না থাকার কারণ ব্যাখ্যা করার জন্য বলা হয়েছে তাদেরকে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল আদালতের আদেশের বিষয়টি সাংবাদিকদের নিশ্চিত করেন।
এ সংক্রান্ত এক আবেদনের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন ও বিচারপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। আদালতে এদিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মুশফিক উদ্দিন বখতিয়ার। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ সরোয়ার কাজল।
এর আগে গত ১১ জুন একটি জাতীয় দৈনিকে ‘ইয়াবা কারবারির পাশে ডিআইজি!’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন সংযুক্ত করে হাইকোর্টে রিট করেন অ্যাডভোকেট জুলফিকার আলী ভুট্টো।
প্রতিবেদনের প্রথম অংশে বলা হয়, মাদকের বিরুদ্ধে দেশজুড়ে চলছে জোরদার অভিযান। ইয়াবা কারবারি ও তাদের নেপথ্য জোগানদাতাদের হন্যে হয়ে খুঁজছে র্যাব-পুলিশ। সাধারণ মানুষও তাই মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠেছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন মাদকের বিরুদ্ধে তার জিরো টলারেন্সের কথা। এই যখন অবস্থা, তখন খোদ পুলিশেরই এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে এক ইয়াবা কারবারির নাম মাদকবিষয়ক একটি মামলার চার্জশিট থেকে ‘বিশেষ সখ্যতার’ কারণে বাদ দেয়ার। যার বিরুদ্ধে এ অভিযোগ, তিনি চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) এস এম মনির-উজ-জামান (গতকাল ০২ জুলাই সোমবার তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে)।
আর অভিযোগকারী তারই রেঞ্জভুক্ত কক্সবাজারের রামু থানার ওসি লিয়াকত আলী। আর যাকে মামলার চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে, তার নাম জি এম ছারোয়ার। তিনি ঢাকার সদরঘাট তেল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি এবং বাংলাদেশ কার্গো ভেসেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক। এর আগে ২০১১ সালের ২০ ডিসেম্বর কক্সবাজারের কলাতলী ট্যুরিস্ট জোনে অবস্থিত বে-ভিউ আবাসিক হোটেলের ৩০৩ নম্বর কক্ষ থেকে ৩২ পিস ইয়াবাসহ তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয়েছিলেন।
প্রসঙ্গত এর মধ্যে গত ২ জুলাই সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে ডিআইজি (উপ-মহাপরিদর্শক) এস এম মনির-উজ-জামানকে চট্টগ্রাম রেঞ্জ থেকে প্রত্যাহার করে পুলিশ সদর দফতরের টিআর (ট্রেনিং রিজার্ভ) পদে বদলি করা হয়।