সন্তানের পরিচয় অস্বীকার করার পর আদালতের নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও ডিএনএ টেস্ট না করায় আলমগীর কবির নামের এক ব্যক্তির জামিন বাতিল করেছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে, আগামী তিনদিনের মধ্যে তাকে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৩ এ আত্মসমর্পণ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তা না হলে তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির জন্য ট্রাইব্যুনাল-৩ কে নির্দেশ উচ্চ আদালত।
হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ আবদুল আউয়াল ও বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) এই আদেশ দেন।
আদালতে আলমগীর কবিরের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হাবিবুল ইসলাম ভূঁইয়া। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ফজলুর রহমান খান ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আলী জিন্নাহ।
পরে মো. আলী জিন্নাহ সাংবাদিকদের জানান, ২০১২ সালের ১২ মে আলমগীর কবিরের সঙ্গে আঁখি আক্তারের বিয়ে হয়। তারা দু’জনই যাত্রাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। এরপর ২০১৪ সালের ৯ জুন আঁখির কোলজুড়ে এক ছেলে সন্তানের জন্ম হয়। এরপর আলমগীর কবির ওই সন্তান তার নয় বলে দাবি করেন। পরে ২০১৭ সালের ২৯ নভেম্বর আঁখি আক্তার সন্তানের পিতার পরিচয় দাবিতে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা করেন।
সেই মামলায় চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল আলমগীর কবিরের ডিএনএ টেস্ট করে ওই শিশু তার কিনা সেটা নিশ্চিত করার আদেশ দেন। আলমগীর ডিএনএ টেস্টের ওই আদেশ না মানায় গত ৩০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন এই আদালত।
এরপর গত ১৫ মে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করলে আদালত তা খারিজ করে দেন এবং তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এরপর আলমগীর কবির জামিন চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেন। সেই আবেদনের শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন। শুনানিতে আসামির ডিএনএ টেস্ট করতে জামিন চাওয়া হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আলমগীর কবিরকে গত ৩০ মে শর্ত সাপেক্ষে এক মাসের জামিন দেন এবং এক মাসের মধ্যে আলমগীর কবিরকে ডিএনএ টেস্ট করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এরপর গত ২৭ জুন ডিএনএ টেস্ট না করেই জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর আবেদন করলে তার জামিনের মেয়াদ ১৫ দিন বৃদ্ধি করেন হাইকোর্ট। কিন্তু সে সময় শেষ হবার পরও ডিএনএ টেস্টও না করা এবং আদালতে প্রতিবেদন দাখিল না করায় তার জামিন বাতিল করে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন।