চক্ষুশিবিরে ২০ জনের চোখ নষ্ট: ওষুধ সরবরাহকারী কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা

চুয়াডাঙ্গায় চক্ষুশিবিরে চিকিৎসা নিতে এসে ২০ জনের চোখ হারানোর ঘটনায় ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর ওষুধ প্রশাসনকে উদ্দেশ্য করে হাইকোর্ট বলেছেন, এই কোম্পানির বিরুদ্ধে যদি আগেই ব্যবস্থা নেয়া হতো তাহলে এতো ক্ষতি হতো না।

বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চকে বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) রাষ্ট্রপক্ষ মামলা করার বিষয়টি জানায়। পরে আদালত বিষয়টির শুনানি আগামী ২৬ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেছেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। এ ছাড়া রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অমিত দাস গুপ্ত। সঙ্গে ছিলেন শুভাষ চন্দ্র দাস। ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমির। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক প্রফেসর ডা. আবুল কালাম আজাদ ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন ডা. মো. খাইরুল আলমের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট রফিকুল ইসলাম।

এর আগে গত ১৭ জুলাই ওই চক্ষশিবিরে ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানকে পক্ষভুক্ত করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এই নির্দেশনার পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (১৯ জুলাই) নির্ধারিত দিনে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার আদালতে জানান, ওই ঘটনায় ওষুধ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান আইরিশ কোম্পানিকে এই মামলায় (রিটে) পক্ষভুক্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের বিরুদ্ধে ওষুধ প্রশাসন থেকে পৃথক একটি মামলা করা হয়েছে।’

এরপর আদালত মামলাটির শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) পর্যন্ত মুলতবি রাখার আদেশ দেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৯ মার্চ একটি জাতীয় দৈনিকে ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।

ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, চুয়াডাঙ্গার ইম্প্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমুনিটি হেল্থ সেন্টারে তিনদিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন (৫ মার্চ) ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়। অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন চিকিৎসক মোহাম্মদ শাহীন। এদের মধ্যে চারজন রোগী নিজেদের উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত স্বজনদের নিয়ে ঢাকায় আসেন।

পরে ইম্প্যাক্টের পক্ষ থেকে ১২ মার্চ একসঙ্গে ১৬ জন রোগীকে ঢাকায় নেয়া হয়। ততদিনে অনেক দেরি হয়ে যায়। ৫ মার্চের ওই অপারেশনের ফলে এদের চোখের এত ভয়াবহ ক্ষতি হয়েছে যে, ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়। আর বাকি একজন অন্য জায়গায় চিকিৎসা নিতে থাকেন।

পরে আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনটি সংযুক্ত করে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় গত ১ এপ্রিল রিট দায়ের করেন।

রিটের শুনানি নিয়ে চোখ হারানো ২০ জনের প্রত্যেককে এক কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।