চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালে চিকিৎসকের অবহেলায় শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলা পরিচালনায় সর্বাত্মক আইনি সহায়তা দেবে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতি।
চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে মতবিনিময়কালে এ আশ্বাস দেন সমিতির নেতারা। রোববার দুপুরে চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
নগরের চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির কার্যালয়ে মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) আইনী সহায়তা কমিটির আহ্বায়ক ও সিইউজের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ, কমিটির সদস্য ও সিইউজের সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম ইফতেখারুল ইসলাম, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আহমেদ কুতুব, পূর্বদেশ ইউনিট প্রধান রতন কান্তি দেবাশিষ ও রাইফার বাবা মামলার বাদী রুবেল খান।
মতবিনিময় সভায় আইনজীবী সমিতির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ছাড়াও আরো উপস্থিত ছিলেন আইনজীবী সমিতির সাংস্কৃতিক সম্পাদক হাসনা হেনা, তথ্য-প্রযুক্তি সম্পাদক রাশেদুল আলম রাশেদ, নির্বাহী কমিটির সদস্য-এনামুল হক, মো. লোকমান, সেলিনা আক্তার ও মো. আকিব চৌধুরী।
মতবিনিময় সভায় চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী বলেন, আইনজীবীর ভুল হলে তা সংশোধন করার সুযোগ আছে। উচ্চ আদালতে আপিল করা যায়। কিন্তু একজন ডাক্তারের ভুল হলে একজন রোগীকে সরাসরি কবরস্থান অথবা শ্মশানে চলে যেতে হয়। চিকিৎসা পেশায় অনেক ভাল ও মেধাবী ডাক্তার রয়েছেন। দু’চার জনের অপকর্মের দায় পেশার সকলে কেন বহন করবেন? আইনজীবীরা সব সময় মানবতার পক্ষে। রাইফা হত্যায় ন্যায়বিচার আদায়ে বাদী রুবেল খানকে আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সকল ধরণের আইনী সহায়তা দেওয়া হবে।
চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. নাজিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপটে আইনজীবী সমিতি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা থাকে। রাইফার মৃত্যুর ঘটনাটি যে অবহেলাজনিত তা বিভিন্ন তদন্ত কমিটির রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে। আইনজীবী সমিতি ন্যায়বিচারের পক্ষে থাকবে। আমরাও রাইফা হত্যার ন্যায়বিচার চাই। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিতে আইনজীবী সমিতি শিশু কন্যা হারানো পিতা সাংবাদিক রুবেল খানের পক্ষে আইনী সহায়তা দিয়ে যাবে।
সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, শিশু কন্যা রাইফার মৃত্যুর পর চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে গঠিত তদন্ত কমিটি রাইফার মৃত্যুর জন্য চিকিৎসকের অদক্ষতা, দায়িত্ব অবহেলাকে দায়ী করে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেন। একইভাবে বেসরকারি হাসপাতাল ম্যাক্সের বিরুদ্ধেও চিকিৎসার অবহেলার অভিযোগ তুলেন। একইভাবে স্বাস্থ্য অধিদফতরের গঠিত তদন্ত কমিটিও ঘটনাটি তদন্ত করে ম্যাক্স হাসপাতালের বিরুদ্ধে ১১টি অনিয়ম চিহ্নিত করেন। তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন ইতিমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে জমা হলেও তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী দায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
চট্টগ্রামের সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে উত্থাপিত তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের আন্দোলন করে আসছে। মামলা রেকর্ড করায় একটি দাবি পুরণ হলেও বাকি দুই দাবি- অনুমোদনহীন ম্যাক্স হাসপাতাল বন্ধ করে দেওয়া ও সাংবাদিকদের সঙ্গে অশোভন আচরণকারী ডা. ফয়সল ইকবালের বিচার দাবিতে আন্দোলনের কর্মসুচি পালন করে আসছেন।