নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের বিচ্ছেদে থাকা এক দম্পতির ৮ বছরের শিশুর হেফাজতে থাকার মামলার শুনানিতে উচ্চ আদালত বলেছেন, ভাঙা সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ ঘটে না।
আজ মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ বিচ্ছেদে থাকা দম্পতির উদ্দেশ্যে এমন মন্তব্য করেন।
আদালতে শিশুর মায়েরপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটির প্যানেল আইনজীবী অমিত দাস গুপ্ত। শিশুর বাবার পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এএসএম শাহরিয়ার কবির।
পরে অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদালত উভয়পক্ষকে পারস্পরিক বোঝাপড়া করতে সময় দিয়েছেন। এ মামলার পরবর্তী আদেশের জন্য ৫ আগস্ট দিন রেখেছেন।
২০০৮ সালের ২৭ জুন নওগাঁর সদর উপজেলার বাংগাবাড়িয়া গ্রামের মো. সাজ্জাদুর রহমানের সঙ্গে একই উপজেলার কুসুমদি গ্রামের তৌহিদা আক্তারের বিবাহ হয়। পরে জন্ম নেয় সন্তান সাজফা সাজিদা। দাম্পত্য কলহের কারণে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। সন্তানকে নিজ হেফাজতে নিতে হাইকোর্টে রিট করেন সাজ্জাদুর। গত ৩০ মে হাইকোর্ট শিশুটিকে আদালতে হাজির করতে নওগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেয়। এরপর ২৭ জুন শিশুটিকে আদালতে হাজির করা হয়। একইসঙ্গে উপস্থিত ছিলেন বাবা-মাও।
ওইদিন শিশু সাজফা সাজিদাকে (৮) আপাতত মায়ের হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। তবে তার বাবা সপ্তাহে কমপক্ষে একদিন সন্তানকে দেখতে পারবেন। আর এ সময়ের মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর দ্বন্দ্ব নিরসন করা যায় কিনা সে বিষয়ে উভয়পক্ষকে প্রচেষ্টা চালাতে বলেছে আদালত।
অমিত দাসগুপ্ত বলেন, আদেশ অনুসারে শিশুটির বাবা দুইবার তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছে। শিশুটির সঙ্গে সম্পর্ক হয়েছে। এখন বাবা শিশুর ভরণ-পোষণের জন্য ৫ হাজার টাকা করে দিতে প্রস্তুত রয়েছেন। এরপর আদালত বাবা-মায়ের পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য আরও সময় দিয়ে ৫ আগস্ট আদেশের দিন রেখেছেন।
তিনি আরও বলেন, ‘বিচ্ছেদের পর শিশুটির মা তার বাবার বিরুদ্ধে দু’টি মামলা করেছেন। এ বিষয়ে আদালত বলেছেন, মামলা করে সংসার করা যায় না। এছাড়াও আদালতে শিশুটির বাবা বলেছে, সে (শিশুটির মা) আমার মায়ের সঙ্গে থাকতে চায় না। তখন আদালত বলেন, শাশুড়ি হচ্ছে মায়ের মতো। তাকে নিয়েইতো সংসার করতে হয়।’