কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের ওপরে হামলার ঘটনাটি দেখার আশ্বাস দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
কুষ্টিয়ায় আদালত প্রাঙ্গণে হামলার ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা হলে আজ মঙ্গলবার (২৪ জুলাই) প্রধান বিচারপতি এ আশ্বাস দেন।
আজ সকালে কয়েকটি পত্রিকার সংবাদ আদালতের নজরে এনে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন। তিনি বলেন, ‘মাই লর্ড, একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে।
আদালত প্রাঙ্গণে হাজিরা দিতে যাওয়ার পর একজন সম্পাদককে হামলা করা হয়। এটা আদালত অবমাননার শামিল। এখন পর্যন্ত আদালত বা সরকারের পক্ষ থেকে কেউ ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি।’
জবাবে প্রধান বিচারপতি তাঁদের আশ্বস্ত করে বলেন, ‘বিষয়টি আমি দেখব।’
হামলার ঘটনা সম্পর্কে আদালতকে অবহিত করেন সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন ও সম্পাদক ব্যারিস্টার এ এম মাহবুবউদ্দিন খোকন। এ সময় ওই ঘটনায় প্রকাশিত বেশ কয়েকটি জাতীয় পত্রিকার প্রতিবেদন আদালতে উপস্থাপন করেন তারা।
পরে জয়নুল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবী সমিতি। আমরা এটা গতকাল (সোমবার, ২৩ জুলাই) পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করেছি। আমরা অপেক্ষা করেছি দেখি, আদালত কী ব্যবস্থা গ্রহণ করে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম, আজ (মঙ্গলবার) পর্যন্ত ওই ঘটনার বিষয়ে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। এজন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ আদালত আপিল বিভাগে হাজির হয়েছি, পত্রিকা নিয়ে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি। প্রধান বিচারপতিকে বলেছি, এই আদালত সংবিধানের অভিভাবক, সব আদালতের অভিভাবক। জনগণের অভিভাবক। মানুষ আদালতে যায় এবং সেই আদালত যদি জনগণের নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে আদালতের প্রতি মানুষের আস্থা থাকবে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রধান বিচারপতিকে আমরা কয়েকটি জাতীয় পত্রিকা দেখিয়েছি। পত্রিকা দিয়েছি। ওই ঘটনার কথা বলেছি। প্রধান বিচারপতিসহ আপিল বিভাগ (অন্যান্য বিচারপতি) আমাদের বক্তব্য শুনেছেন। শুনে তারা বলেছেন, বিষয়টি তারা দেখবেন।’
এ ঘটনায় মামলা না করে কিংবা হাইকোর্টে রিট দায়ের না করে সরাসরি আপিলে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে সমিতির সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘এটা কোর্ট আঙ্গিনার ঘটনা। কোর্ট আঙ্গিনায় প্রত্যেক বিচারপ্রার্থীর নিরাপত্তা দেওয়া প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব। প্রধান বিচারপতির নির্দেশে আমরা আশা করি, ওইখানকার কোর্ট অফিসার মামলা করবেন। তারা মামলা করলে সেটা গুরুতর মামলা হবে। এ কারণে আমরা ব্যক্তিগতভাবে মামলা করিনি। সব আদালতের অভিভাবক হিসেবে প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব সব আদালতের নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা। এজন্যই আমরা প্রধান বিচারপতির দৃষ্টি আকর্ষণ করেছি।’
প্রসঙ্গত, গত ২২ জুলাই বিকাল সাড়ে চারটার দিকে কুষ্টিয়ার আদালতে মানহানির মামলায় জামিন নিয়ে বের হওয়ার সময় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান হামলার শিকার হন। আদালত থেকে বের হয়ে যাওয়ার সময় লাঠি ও ইট দিয়ে তাকে বহনকারী গাড়ির গ্লাস ভেঙে ফেলা হয়। এ সময় তিনি আহত হন।
পরে বিকাল পাঁচটার দিকে আদালত প্রাঙ্গণ থেকে অ্যাম্বুলেন্সে করে মাহমুদুর রহমান ও তার সহযোগীরা ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন।