আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলো মাদকবিরোধী অভিযানে যাবার সময় যেন গ্রেফতারকৃত লোককে নিয়ে না যায় – এই সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক বলেন, “এসব অভিযানের সময় মানবাধিকারের বিষয়টা দেখতে হবে। আমরা আমাদের সংবিধান, সিআরপিসি, পুলিশ এ্যাক্ট, আন্তর্জাতিক আইন – এ সংক্রান্ত সবকিছু এক জায়গায় করে আমরা পুলিশ কর্মকর্তাদের বলছি যে এগুলো পালন করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে।”
এমন এক সময় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এ কথা বললো – যখন গত এক সপ্তাহের মধ্যেই দেশের সংবাদমাধ্যমগুলোয় মাদকবিরোধী অভিযানের সময় কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধে’ অন্তত ৫ জন নিহত হবার খবর বেরিয়েছে।
আরেক হিসেবে দেখা যায়, গত মে মাস থেকে শুরু হওয়া দেশব্যাপী মাদকবিরোধী অভিযানে দু’শোরও বশি লোক নিহত হয়েছে।
এসব ঘটনার ব্যাপারে প্রায় সব সময়ই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে প্রায় একই রকম ব্যাখ্যা বা বর্ণনা দেয়া হয়। তাতে বলা হয়, পুলিশ মাদকবিরোধী অভিযানে কাউকে আটক করে, তার পর তাকে নিয়ে আরেক দফা অভিযানে যায়, তখন মাদকব্যবসায়ীরা গুলি ছোঁড়ে, তাতে আটককৃত ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়।
এসব ঘটনা নিয়ে বাংলাদেশের মানবাধিকার সংগঠনগুলো তীব্র সমালোচনা করেছে এবং তারা এগুলোকে বিচার বহির্ভূত হত্যাকান্ড বলে আখ্যায়িত করে থাকে।
এ প্রেক্ষাপটেই বাংলাদেশের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে মাদক-বিরোধী অভিযানে না যাওয়ার সুপারিশ করেছে।
কমিশন বলছে, গ্রেফতার হওয়া কোন ব্যক্তিকে যদি সাথে নিতেই হয় তাহলে তাদের সাথে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকেও রাখতে হবে।
কমিশনের চেয়ারম্যান কাজী রিয়াজুল হক এ ব্যাপারে বলেন, এই সুপারিশ তারা করছেন এ জন্যেই যে এসব ঘটনা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে।
“মানুষের মনে সন্দেহ হচ্ছে। পুলিশ বলছে, তাদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে, জানমাল রক্ষার্থে তারা গুলি করছে। আমরা বলছি. এমন কথা কোথাও নেই যে ম্যাজিস্ট্রেটকে নিয়ে যাওয়া যাবে না। ”
মি. হক আরও বলেন, – “গুলি করার আদেশ ম্যাজিস্ট্রেটও দিতে পারে। না থাকলে উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তা দিতে পারে। কিন্তু পরবর্তীকালে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে দিয়ে এর তদন্ত করাতে হয়। ”
“ঘটনাস্থল থেকে যে মালামাল জব্দ করা হয়, তাতে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির স্বাক্ষরও নিতে হয়। এ ব্যাপারগুলো নিশ্চিত করা গেলে আমরা মনে করি একটা চেক এ্যান্ড ব্যালান্স থাকবে” – বলেন মি. হক। বিবিসি বাংলা