নৌমন্ত্রী শাজাহান খান কোন ক্ষমতা বলে মন্ত্রীর পাশাপাশি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন ও শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি রয়েছেন তার কারণ ব্যাখ্যা করতে নোটিশ পাঠিয়েছেন এক আইনজীবী।
আজ বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) দুপুরে ডাক ও রেজিস্ট্রিযোগে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. একলাস উদ্দিন এ লিগ্যাল নোটিশ পাঠান।
নোটিশে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মন্ত্রীকে জবাব দিতে বলা হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ নোটিশের জবাব না দিলে হাইকোর্টে রিট করা হবে বলেও জানান তিনি।
নোটিশে বলা হয়, আপনাকে এ মর্মে নোটিশ দেয়া হচ্ছে যে, বিগত ৫ জানুয়ারি ২০১৪ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় মাদারীপুর-২ থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। পরর্বতীতে একই বছরের ১২ জানুয়ারি নৌমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। সংবিধান সংরক্ষণ, সব নাগরিকের প্রতি সমান আচরণ ও রাগ অনুরাগ কিংবা বিরাগের বশবর্তী হয়ে কোনো কাজ করবেন না। যেহেতু শ্রমিক সংগঠন একটি কালেকটিভ বার্গেনিং এজেন্ট (সিবিএ), যা শ্রমিকদের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করার নিয়ম রয়েছে। সেখানে রাষ্ট্রের একজন মন্ত্রী হয়েও আপনি সিবিএ এর কার্যকরী সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যা অসাংবিধানিক।
নোটিশে আরও বলা হয়, শ্রমিক যদি কোনো সমস্যা বা অপরাধে জড়িত থাকে তবে ব্যবস্থা গ্রহণ করে শ্রমিক ইউনিয়ন ফেডারেশন। আপনি একজন মন্ত্রী হওয়ার পরও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি দায়িত্ব পালন করায় সাংবিধানিক এবং নৈতিকভাবে প্রশ্নবিদ্ধ।
নোটিশে সংবিধানের ১৪৮ ধারা মোতাবেক ২০১৪ সালের ১২ জানুয়ারিতে মন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেছেন। তার পরেও কোন ক্ষমতা বলে একটি সাংবিধানিক পদে থেকেও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি হয়েছেন। একই সঙ্গে সাংবিধানিক পদে থাকা কেন বেআইনি ও নৈতিকতা বিরোধী হবে না তা এ নোটিশ পাওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জবাব দেয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
নোটিশ প্রদানকারী আইনজীবী একলাছ উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, সংবিধানের ১৪৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী শাহজাহান খান মন্ত্রী থাকা অবস্থায় শ্রমিকদের পক্ষ নিয়ে কথা বলতে পারেন না।
প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী ও উপমন্ত্রীর শপথ প্রসঙ্গে সংবিধানের ১৪৮ (২) অনুচ্ছেদে বলা আছে, ‘আমি সশ্রদ্ধচিত্তে শপথ করিতেছি যে, আইন অনুযায়ী সরকারের প্রধানমন্ত্রী (কিংবা ক্ষেত্র মতে মন্ত্রী, বা উপমন্ত্রী) পদের কর্তব্য বিশ্বস্ততার সহিত পালন করিব। আমি বাংলাদেশের প্রতি অকৃত্রিম বিশ্বাস ও অনুগত্য পোষণ করিব এবং ভীতি বা অনুগ্রহ, অনুরাগ বা বিরাগের বশবর্তী না হইয়া সকলের প্রতি আইন অনুযায়ী যথাবিহীত আচরণ করিব।’
একলাছ উদ্দিন বলেন, ‘শাহজাহান খান মন্ত্রীর শপথ নেওয়ার পরও কোনো একটি সম্প্রদায়ের হয়ে কাজ করছে। তাদের পক্ষ নিচ্ছে। এটি সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।’
উল্লেখ্য, গত রোববার বিমানবন্দর সড়কে জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাসের চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন স্কুল অ্যন্ড কলেজের উচ্চ মাধ্যমিকের প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিম ও দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র আবদুল করিম রাজীব নিহত হয়। ঘটনার দিন সচিবালয়ে সাংবাদিকদের হাসিমুখে প্রতিক্রিয়া জানান নৌমন্ত্রী শাজাহান খান। এ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।