নওগাঁর এক দম্পত্তির দাম্পত্য কলহ ও বিবাহ বিচ্ছেদের পর তাদের পরিবারের আট বছরের এক কন্যাশিশুকে বাবার হেফাজতে নিতে করা মামলার বিষয়ে শুনানির সুপ্রিম কোর্টের অবকাশের আরও এক সপ্তাহ পর দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট। ওই শিশুর মা-বাবাকে বোঝাপড়া করার জন্য আগামী ১০ অক্টৈাবর পর্যন্ত সময় দিয়েছেন আদালত।
আজ রোববার (৫ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আদালতে শিশুর বাবার পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন আইনজীবী এ এস এম শাহরিয়ার কবির। শিশুর মাকে আইনি সহায়তা দিচ্ছে সুপ্রিম কোর্ট লিগ্যাল এইড কমিটি। মায়ের পক্ষে শুনানি করেন কমিটির প্যানেল আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত।
স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদের পর সন্তানকে সাথে রাখার অধিকার-সংক্রান্ত এক মামলার শুনানিতে শিশুর স্বাভাবিক মানসিক বিকাশে মা-বাবার মধ্যে সমঝোতার ওপর জোর দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ২৪ জুলাই বলেছেন, ভাঙা সংসারে শিশুর শারীরিক বিকাশ ঘটলেও মানসিক বিকাশ ঘটে না।
২০০৮ সালে ওই শিশুর মা-বাবার বিয়ে হয়। মা ও বাবার বাড়ি নওগাঁয়। দাম্পত্য জীবনে মনোমালিন্যের জেরে গত বছরের ১৮ ডিসেম্বর ওই ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাকের নোটিশ পাঠান। শিশুটি তার মায়ের কাছেই ছিল। এ অবস্থায় শিশুকে বে-আইনিভাবে আটক রাখা হয়েছে দাবি করে হাইকোর্টে রিট দায়ের করেন শিশুর বাবা।
শুনানি শেষে গত ৩০ মে হাইকোর্ট রুল জারি করেন এবং শিশুটিকে ২৭ জুন আদালতে হাজির করতে সংশ্লিষ্ট পুলিশ ও শিশুর মাকে নির্দেশ দেন। ধার্য তারিখে নওগাঁ সদর থানা-পুলিশ শিশুটিকে আদালতে হাজির করে।
পরে ২৭ জুন আদেশে আদালত বলেন, শিশুটি চার সপ্তাহ তার মায়ের কাছে থাকবে। বাবা সপ্তায় কমপক্ষে একদিন যেকোনো সময় শিশুটির সঙ্গে দেখা করে নিজের কাছে রাখার সুযোগ পাবেন। এরই ধারাবাহিকতায় আজ মায়ের সঙ্গে শিশুটি আদালতে হাজির হয়েছিল।
আইনজীবী অমিত দাশগুপ্ত সাংবাদিকদের বলেন, এর আগে দেয়া আদেশ অনুসারে বাবা দুইবার শিশুটির সঙ্গে দেখা করেছেন। বাবা শিশুর ভরণপোষণের জন্য পাঁচ হাজার টাকা করে দিতে প্রস্তুত বলে জানানো হয়। উভয়পক্ষের আইনজীবীর সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত শিশুটির মা-বাবার পারস্পরিক বোঝাপড়ার জন্য আরও সময় দিয়ে ১০ অক্টোবর পরবর্তী আদেশের জন্য দিন রেখেছেন। এই সময় পর্যন্ত শিশুটি মায়ের কাছেই থাকবে।