ছয় বছরেরও বেশি আগে রাজধানীর দারুস সালাম থানায় শিশু সালমান সামি হত্যা মামলায় তিনজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রায়ে আদালত বলেছেন, আট বছরের একটি নিরপরাধ শিশু, যার জীবন এখন শুরুই হয়নি তাকে এভাবে খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যার সাজা মৃত্যুদণ্ডই উপযুক্ত।
আজ মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) হাইকোর্টের বিচারপতি কৃষ্ণাদেব নাথ ও বিচারপতি শহিদুল করিমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই রায় দেন।
রায়ে সামি হত্যায় তিন আসামি মো. রাকিব (২০), মো. সৈকত খান (২০) ও মো. জানে আলমের (২০) মৃত্যুদণ্ডের সাজা বহাল রাখা হয়।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন আব্দুল বাসেত মজুমদার, ফজলুল হক খান ফরিদ ও শহিদুল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জহিরুল হক জহির, সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আতিকুল হক সেলিম ও মিজানুর রহমান।
মামলার বিবরণে জানা যায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ২০১১ সালের ২৭ মে শিশু সালমান সামিকে পেয়ারা খাওয়ার কথা বলে ক্রিকেট খেলার মাঠ থেকে ডেকে নিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে আসামিরা। পরে তারা শিশুটির লাশ কাউন্দিয়া খালে ফেলে দেয়। শিশুটির লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
এ ঘটনায় শিশু সামির বাবা মো. হোসেন ওই দিনই দারুস সালাম থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে। তারপরও ছেলের কোনো খোঁজ না পেয়ে তিন দিন পর রাকিবকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় রাকিবকে পুলিশ গ্রেফতার করে কয়েকদফা জিজ্ঞাসাবাদ করলেও রাকিবের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পরে মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তর হয়। ডিবি এ ঘটনায় জড়িত সৈকত ও জানে আলম নামে আরও দুইজনকে গ্রেফতার করে। পরে তিন আসামিই স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। ওই বছরের ১৭ অক্টোবর এ মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
এ মামলার শুনানি শেষে ২০১৩ সালের ৭ জানুয়ারি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এর বিচারক মোতাহের হোসেন তিনজনের মৃত্যুদণ্ড আদেশ দিয়ে রায় দেন।
ওই রায়ের ডেথ রেফারেন্স ও পৃথক পৃথক হাইকোর্টে আপিল দায়ের করে আসামিপক্ষ। ওই আপিলের দীর্ঘ শুনানি শেষে আজ আদালত এ রায় দেন।