চট্টগ্রাম চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এক আসামীর জামিন সংক্রান্তে জালিয়াতির ঘটনায় আসামী পক্ষের আইনজীবীকে শোকজ করা হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট থানার জিআরও বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা কেন রুজু করা হবে না তৎমর্মে শোকজ করা হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার (১৬ই অক্টোবর) চট্টগ্রামের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শহীদুল্লাহ কায়ছারের আদালত এক মামলার সংবাদদাতার আইনজীবীর বিশেষ দরখাস্ত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
জানা যায়, সাতাকনিয়া থানার ১২(৯)১৮ মামলায় মোট ১২ জন আসামীর মধ্যে ৩ নং আসামী বাদে অপরাপর আসামীদের জন্য গত ৮ অক্টোবর আদালতে আত্মসমর্পণপূর্বক জামিন আবেদন করলে চট্টগ্রামের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত হেলাল উদ্দিন সকল আসামীর জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। কিন্তু আসামী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাড.কফিল উদ্দিন আদালতে জামিননামা দাখিলের সময় ৩ নাম্বার আসামীর পক্ষেও জামিননামা দাখিল করেন। সংশ্লিষ্ট জিআরও যাচাই না করেই এজহারের ১ নাম্বার আসামীর স্থলে ৩ নাম্বার আসামীর তথ্য দিয়ে জামিননামা গ্রহণ করেন।
বিষয়টি গতকাল সোমবার (১৫ অক্টোবর) সংবাদদাতার নিয়োজিত আইনজীবীর অ্যাড. আরিফুর রহমানের দৃষ্টিগোচর হয় । এজহারের ৩ নাম্বার আসামীর জন্য আদৌ কোন জামিন আবেদন করা হইয়াছে কিনা তা জানার জন্য ঐদিনই সংবাদ জানার জন্যে আইনানুগভাবে দরখাস্ত নিয়া সংবাদদাতার আইনজীবী জিআরও সেকশনে যোগাযোগ করেন। জিআরও সেকশনে কোন প্রকার সহযোগিতা করা হয়নি মর্মে সংবাদদাতার আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো: আরিফুর রহমান অভিযোগ করেন। ফলশ্রুতিতে তিনি তাৎক্ষনিক চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতকে বিষয়টি লিখিতভাবে অবগত করলে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কমারুন নাহার দরখাস্তটি আজ সংশ্লিষ্ট আদালতে শুনানীর আদেশ দেন।
আজ সংশ্লিষ্ট আদালতের দায়িত্ব প্রাপ্ত জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (১ম) শহীদুল্লাহ কায়সারের আদালতে উভয়পক্ষের আইনজীবী দীর্ঘ শুনানী করেন। উভয়পক্ষে শুনানীয়ান্তে আদালত ১নাম্বার আসামীর জামিন বাতিল করে ২৪ ঘন্টার মধ্যে আদালতে আত্মসমর্পণের নির্দেশ দেন এবং আসামী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী অ্যাড. কফিল উদ্দিন এর বিরুদ্ধে কেন পেশাগত অসদাচরণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না মর্মে শোকজ এর আদেশ দেন। একই আদেশে সংশ্লিষ্ট থানার জি.আরও বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা কেন রুজু করা হইবে না তৎমর্মে শোকজ করে আদালত। এবং আদেশের কপি সংশ্লিষ্ট সকলকে প্রেরণের নির্দেশ প্রদান করেন।
এই বিষয়ে সংবাদদাতার নিয়োজিত অ্যাড. মো: আরিফুর রহমান ল’ইয়ার্স ক্লাব বাংলাদেশ ডটকমকে বলেন যে, ” সারা দেশের আদালতে এ ধরণের জালিয়াতি চক্র সক্রিয় রয়েছে। যার কারনে আইন পেশার বদনাম হচ্ছে। জনগণ ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। জিআরও শাখার অনিয়ম দুর্নীতির কারনে বিচারকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। পরস্পর যোগসাজশ সাধন করে জালিয়াতি চক্র সনাক্ত মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হল চট্টগ্রাম আদালত অঙ্গনের বাইরে নয়।”
মোঃ রায়হান ওয়াজেদ চৌধুরী/চট্টগ্রাম প্রতিনিধি