বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নেতৃত্ব ধ্বংস করতেই ড. কামাল হোসেনকে সামনে আনা হয়েছে। জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের অন্যতম উদ্যোক্তা ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনের ফাঁস হওয়া এক ফোনালাপের বক্তব্য থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ফাঁস হওয়া প্রায় আড়াই মিনিটের ওই ফোনালাপে রব মজুমদারের সঙ্গে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রসঙ্গে কথা বলেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের এই উপদেষ্টা।
ফোনালাপের শুরুতে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, কি খবর মজুমদার সাহেব? এর উত্তরে রব মজুমদার বলেন, জ্বি, আসসালামুআলাইকুম স্যার।
তখন মইনুল বলেন, জ্বি বলেন। মজুমদার বলেন, কেমন আছেন স্যার, আপনি?
এর উত্তরে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা বলেন, ‘আছি… জেলের ভাত কয়েকদিন খেতে হবে আমাকে। সেজন্য রেডি আছি।’ তখন মজুমদার বলেন, আচ্ছা আচ্ছা।
এর পর সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মইনুল বলেন, ‘কেস করছে দুইটা আরও নাকি করবে। এই মামলা টামলা দিয়ে এরা… এদের মামলার টামলার নামে রাজনীতিতে আসা উচিত। ঠিক আছে, করুক। সবচেয়ে বড় কথা হলো এই মেয়েটার পক্ষের ৯৫% লোক আমার পক্ষে। প্রথম আলোর একটি সার্ভে হইছে, সেখানে ৯৫% লোক সাপোর্ট মি আর ৫% লোক তার পক্ষে। একটা মেয়েলোক যে এত বাজে হইতে পারে আমি তো জানতাম না।’
তখন মজুমদার বলেন, আপনি নাকি লন্ডন দেখছেন বলে। এর জবাবে মইনুল বলেন, ‘কোথায় চাকরি করে তা জানতাম নাকি। ঘটনাটা আমি এখন শুনতেছি। বাট ঘটনাটা আমি বলছি, আমি রাগ হয়ে বলছি। কিন্তু একটি মেয়ের তো এটা বাড়ানো আর ঠিক না। কারণ আমি সেজন্য তাকে ফোন করে বলছি, দুঃখপ্রকাশ করেছি এবং ক্ষমাও চাইছি। কারণ একটা মেয়ের ব্যাপারে আমার ওভার জেনারেস হতে কোনো অসুবিধা নাই। তাই না। ফলে আমি মাফও চাইছি। এর পরে সে তার তো এই কাজ। এটা তো আমি জানতাম না।’
ব্যারিস্টার মইনুল আরও বলেন, ‘ভদ্রমহিলাকে বললাম,আপনি আমাকে প্রভোক করেছেন। আমি তাতে রেগে গেছি। একটি স্লিপ হয়ে গেছে আমার। তারপরও আমি …দিয়ে বলছি। এখন দেখছি, সে ৯৫ লোকের কাছে বাজে বলে পরিচিত।’
এর পর মজুমদার বলেন, আপনি আর কামাল হোসেনকে নাকি লন্ডনে দেখছে তারেকের সঙ্গে মিটিং করতে। এ রকম একটা। তখন মইনুল বলেন, ‘আমাদের মিটিং আমি তারেকের সঙ্গে মিটিংয়ে যাব কেন? এটি কোথাকার ছাগল? এটা গরু, কাউ না মুরগি?’
এ কথা শুনে মজুমদার হাসতে থাকেন। তখন মইনুল বলেন, ‘আমরা তারেকের নেতৃত্ব ধ্বংস করার জন্যই ড. কামালকে আনছি।’
[youtube https://www.youtube.com/watch?v=8K3dJo_PdqU?controls=0]
গত ১৬ অক্টোবর রাতে বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল একাত্তর টিভির টকশোতে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেনকে সাংবাদিক মাসুদা ভাট্টি প্রশ্ন করেন, ‘জাতীয় ঐক্যফ্রন্টে আপনি যে হিসেবে উপস্থিত থাকেন- আপনি বলেছেন আপনি নাগরিক হিসেবে উপস্থিত থাকেন।কিন্তু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অনেকেই বলছেন, আপনি জামায়াতের প্রতিনিধি হয়ে সেখানে উপস্থিত থাকেন।’
মাসুদা ভাট্টির এই আক্রমণাত্মক প্রশ্নে রেগে গিয়ে মইনুল হোসেন বলেন, ‘আপনার দুঃসাহসের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ দিচ্ছি। আপনি চরিত্রহীন বলে আমি মনে করতে চাই। আমার সঙ্গে জামায়াতের কানেকশনের কোনো প্রশ্নই নেই। আপনি যে প্রশ্ন করেছেন তা আমার জন্য অত্যন্ত বিব্রতকর।’
পরে ‘শিক্ষিত ভদ্রমহিলা’ হিসেবে অন্য প্রশ্ন করার আহ্বান জানান ব্যারিস্টার মইনুল। এ সময় মাসুদা ভাট্টি বলেন, ‘আপনি শিবিরের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে বক্তব্য দিয়েছিলেন এবং আপনি সেই অনুষ্ঠানে বলেছেন যে আপনার সঙ্গে শিবিরের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ আছে। সেই বক্তব্য এখন সব জায়গায় দেখানো হচ্ছে।এ কারণে মানুষ এই প্রশ্ন করছে যে আপনি জামায়াতের হয়ে এখানে উপস্থিত থাকছেন কি না।’
এর জবাবে মইনুল বলেন, ‘আমাকে বাদ দেন। আচ্ছা, ঠিক আছে আপনি কার প্রভু হিসেবে আসছেন?’ তখন মাসুদা ভাট্টি বলেন, ‘আমি কোনো দলের নই, বরং সাংবাদিক হিসেবে এসেছি।’