বগুড়া জেলা জজশিপ, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, স্পেশাল জজ আদালত, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনাল এবং জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেওয়ানি, ফৌজদারি ও আপিলসহ মোট ৪৫ হাজার ২৪টি মামলা বিচারাধীন। অতিরিক্ত মামলার চাপ, জনবল ও বিচারক সংকটসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন ধরে ঝুলছে মামলাগুলো।
বিচারাধীন মামলাগুলোর মধ্যে রয়েছে- জমিজমা সংক্রান্ত দেওয়ানি মামলা, নারী ও শিশু নির্যাতন, খুন, ডাকাতি, ছিনতাই, মাদকদ্রব্য বিস্ফোরক দ্রব্য, সন্ত্রাসবিরোধী, যৌতুক বিরোধ আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন, অর্থ ঋণ দেওয়ানি ও ফৌজদারি আপিল মামলা।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, জেলা জজশিপ আদালতে ২৮ হাজার ১৭৯টি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৩ হাজার ৪৬৯টি, ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে ৫ হাজার ৪২৫টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ট্রাইব্যুনাল-১ আদালতে ১ হাজার ৭৭টি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে ৫১৬টি, স্পেশাল জজ আদালতে ৭৮৩টি মামলা বিচারাধীন রয়েছে।
এর মধ্যে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি আপিল, ডিভিশন, মিস আপিলসহ ৯৯৪টি, বিশেষ ক্ষমতা আইন, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন ফৌজদারি আপিল ৩ হাজার ৪৩৯টি, ফৌজদারি মিসকেস ৯৭টি, প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি আপিল, রিভিশন ও মিস আপিল ৪১৮টি ও ফৌজদারি ১ হাজার ৫২৩টি মামলা রয়েছে।
পাশাপাশি শিশু আদালতে রয়েছে ৪৩৯টি মামলা, দ্বিতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি ৬০১টি, ফৌজদারি ৩ হাজার ৩৭টি, তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি ৪৩২টি, ফৌজদারি ২ হাজার ৪১৪টি, প্রথম যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ২ হাজার ৮০৫টি, দেওয়ানি ২ হাজার ৬৩টি ফৌজদারি, দ্বিতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে দেওয়ানি ২ হাজার ১১৩টি ও ফৌজদারি ২ হাজার ১১৩টি ও ফৌজদারি ২ হাজার ৪৩১টি, তৃতীয় যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ আদালতে ৮১৪টি দেওয়ানি ৪০০টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে।
ল্যান্ড সার্ভে ট্রাইব্যুনালে রেকর্ড সংশোধনীর ৫ হাজার ৪২৫টি, সদর প্রথম সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৪ হাজার ৩৮৫টি দেওয়ানি, শিবগঞ্জ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ১ হাজার ৫০৬টি দেওয়ানি, গাবতলী সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ১ হাজার ৭টি দেওয়ানি, ধুনট সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৭৮৯টি দেওয়ানি, আদমদীঘি সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৭২০টি দেওয়ানি, শেরপুর সহকারী জজ আদালতে ৯০২টি দেওয়ানি, সোনাতলা সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৭৫১টি দেওয়ানি, দুপচাঁচিয়া সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৬৪৩টি দেওয়ানি, সদর দ্বিতীয় সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৬৯২টি, প্রথম অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী জজ (পারিবারিক) আদালতে ৬৮৭টি, দ্বিতীয় অতিরিক্ত সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে ৭৭টি, কাহালু সহকারী জজ আদালতে ৫৯৮টি, নন্দীগ্রাম সহকারী জজ আদালতে ১ হাজার ১৯৭টি ও সারিয়াকান্দি সহকারী জজ আদালতে ৫৯৬টি দেওয়ানি মামলা বিচারাধীন।
এছাড়া নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এ ১ হাজার ৭৭টি, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২ এ ১ হাজার ৫১৬টি এবং স্পেশাল জজ আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন ও দুর্নীতিসহ ৭৮৩টি মামলা বিচারাধীন।
অপরদিকে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে বিচারিক ১ হাজার ৫৭২টি ও আমলি ৩ হাজার ২২৫টি, সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩ ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-৩-এর আদালতে বিচারিক ১ হাজার ২১০টি, আমলি ১ হাজার ৪৭২টি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্টেট-২ ও ৪-এর আদালতে বিচারিক ১ হাজার ২৭০টি, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট-২-এর আদালতে বিচারিক ২ হাজার ২৮৩টি এবং আমলি ১ হাজার ১৫৪টি ফৌজদারি মামলার বিচার নিষ্পত্তির অপেক্ষায়।
এ ব্যাপারে বগুড়ার পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) আব্দুল মতিন বলেন, বিচারক ও জনবল সংকটের কারণে এই মামলা জটগুলো দেখা দিয়েছে। এছাড়া সাক্ষীরা ঠিকমতো আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসেন না। এতে মামলা নিষ্পত্তি করতে সময় লাগছে বেশি। মামলা জটের পেছনে এটিও একটা বড় কারণ।