আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর হতে দেওয়ানি ও ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থায় অভূতপূর্ব উন্নয়ন সাধন করেছে। বর্তমান সরকার মামলা জট কমানোকে একটি চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করে জট কমানোর জন্য নিরলসভাবে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
আজ সোমবার (২৯ অক্টোবর) স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে টেবিলে উত্থাপিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকার দলীয় সংসদ সদস্য এম আবদুল লতিফের প্রশ্নের লিখিত জবাবে এ তথ্য জানান আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক।
তিনি জানান, আইন ও বিচার বিভাগ সারাদেশে বিচার ব্যবস্থায় দীর্ঘসূত্রিতা কমিয়ে বিচার কাজ ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও এজলাস সঙ্কট নিরসনে বেশ কিছু কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে এবং এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্যে অর্জিত হয়েছে। বিচার কাজে গতিশীলতা বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের বিশেষ উদ্যোগে বিভিন্ন পর্যায়ের বিচারকের সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনকে গতিশীল করা হয়েছে, যাতে শূণ্য পদে দ্রুত নিয়োগ দেওয়া যায়।
মন্ত্রী জানান, মামলা দ্রুত বিচার ও নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে অন্যতম একটি প্রতিবন্ধকতা হলো এজলাস সঙ্কট। এজলাস স্বল্পতা দূর করে সর্বোচ্চ কর্মঘন্টা ব্যবহার করে বিচার কাজে গতিশীলতা আনয়নে সরকার কাজ করে যাচ্ছে। বিচারকের সংখ্যা বৃদ্ধি ও এজলাস সঙ্কট নিরসনের পাশাপাশি সরকার বর্তমানে মামলা ব্যবস্থাপনার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছেন।
মন্ত্রী আনিসুল হক জানান, বর্তমান সরকার বিচারপ্রার্থী জনগণের ভোগান্তি লাঘবের জন্য একটি আধুনিক বিচার বিভাগ ও বিচার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর গতিশীল নেতৃত্বে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বচাস করি যে, বিচার বিভাগ আধুনিকায়ন ও গতিশীল করার লক্ষ্যে বর্তমান সরকার যেসকল পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তা বাস্তবায়িত হলে সারাদেশে বিচারাধীন মামলার সংখ্যা একটি সহনীয় পর্যায়ে নেমে আসবে এবং মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কার্যকর ও দৃশ্যমান উন্নয়ন সাধিত হবে।
সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য বেগম উম্মে রাজিয়া কাজলের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশের যে কোন প্রান্তে যুদ্ধাপরাধের কোন অভিযোগ থাকলে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কার্যপ্রণালী বিধিমালা, ২০১০ এর ৫ নং বিধি অনুযায়ী উক্ত অভিযোগ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্তকারী সংস্থার কাছে প্রেরণ করতে হবে। তদন্তকারী সংস্থা বিধি মোতাবেক পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে এ সকল অপরাধীদের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হয়।
সরকার দলীয় অপর সদস্য এ কে এম রহমতুল্লাহ’র প্রশ্নের জবাবে আইনমন্ত্রী জানান, বিচার নিয়োগের ক্ষেত্রে পিএসসির সহায়তা নেয়ার আবশ্যকতা নেই। বিধি অনুসারে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিজেএস পরীক্ষা গ্রহণ করে থাকে এবং যাচাই-বাছাই শেষে চূড়ান্তভাবে মনোনিত প্রার্থীদের নাম রাষ্ট্রপতির কাছে সুপারিশ করে থাকে। রাষ্ট্রপতি সুপারিশকৃত প্রার্থীদের জুডিশিয়াল সার্ভিসের প্রবেশ পদে নিয়োগদান করেন এবং এ প্রক্রিয়ায় পিএসসির সহায়তার আইনগত কোন সুযোগ না থাকায় পিএসসির সহায়তা নেয়া হয় না।