প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন বলেছেন, জাতির বৃহত্তর স্বার্থে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন ও সামগ্রিক উন্নয়নের ধারাকে ত্বরান্বিত করার জন্য রাষ্ট্রের তিনটি অঙ্গের সমন্বিত প্রচেষ্টা অপরিহার্য। সংবিধানে আইন বিভাগ, শাসন বিভাগ ও বিচার বিভাগের দায়িত্ব এবং স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। এই তিনটি অঙ্গের সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক গণতন্ত্রকে বিকশিত করে।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির মিলনায়তনে বুধবার (১২ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধান বিচারপতি বলেন, গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় বিচার বিভাগের ভূমিকা অপরিসীম। আইনের শাসন, মৌলিক মানবাধিকার, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সামাজিক সাম্য, স্বাধীনতা ও সুবিচার নিশ্চিত করার লক্ষে বাংলাদেশের সংবিধান প্রণীত হয়েছে।
তিনি বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের ভয়াবহতা দেখে মানবকুলকে রক্ষা ও বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশে ১৯৪৫ সালে জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠিত হয়। অঙ্গীকার করা হয় মৌলিক মানবাধিকার, মানুষের মর্যাদা ও জাতি ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকলের সমানাধিকার বাস্তবায়ন করার। এই লক্ষ্যে ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে সর্বজনীন মানবাধিকার সনদ গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সব সদস্য রাষ্ট্র এই মানবাধিকার সনদে অঙ্গীকারাবদ্ধ। তবে এই মানবাধিকার কতটুকু বাস্তবায়িত হয়েছে, তা দেখার সময় এসেছে। আজ বিশ্ব-জনগোষ্ঠী মানবাধিকার আন্দোলনকে আবিষ্কার করেছে মানুষ হিসেবে বেঁচে থাকার শক্তি ও সাহসের আলোকবর্তিকা হিসেবে।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেন আরও বলেন, দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের পর যেসব উন্নয়নশীল দেশে লিখিত সংবিধান গ্রহণ করা হয়েছে তাতে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি ও মৌলিক অধিকারের কথা লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। আমাদের সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতির কথা বলা হয়েছে, যা অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারের বিষয়বস্তু।
মানবাধিকার ও সমাজ উন্নয়ন সংস্থা মওসুস’র প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আইন, মানবাধিকার ও ভোটাধিকারবিষয়ক এই সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইনজীবী গোলাম রহমান ভূঁইয়া। এতে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) একাংশের সভাপতি রুহুল আমিন গাজী।