প্রার্থিতা নিয়ে খালেদা জিয়ার রিট আবেদন শুনানি করতে প্রধান বিচারপতির গঠিত তৃতীয় হাইকোর্ট বেঞ্চের প্রতি তার আইনজীবীদের অনাস্থা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন আদালত। এরপর রিটের শুনানি না করেই আদালত বর্জন করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
আজ মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) বিচারপতি জে বি এম হাসানের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্টের একক বেঞ্চে এ ঘটনা ঘটে।
এ আদেশের পর ইসির পক্ষে রিটের ওপর শুনানি শুরু করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম।
এ সময় খালেদার আইনজীবীরা আদালত থেকে বেরিয়ে যান। আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী, ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল।
এর আগে মঙ্গলবার সকালে বিচারপতি জে বি এম হাসানের কোর্টে অনাস্থা জানিয়ে লিখিত আবেদন দাখিল করেন খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর আদালত তাদের এই অনাস্থা আবেদন খারিজের আদেশ দেন এবং প্রার্থিতা চেয়ে খালেদা জিয়ার রিটের ওপর শুনানি করতে বলেন।
এ পর্যায়ে খালেদা জিয়ার আইনজীবী ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল আদালতকে বলেন, ‘আমরা এই কোর্টের ওপর অনাস্থা জানিয়েছি। আপনি আমাদের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। এখন আমরা এই আদেশের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ আদালতে যাবো। তা সত্ত্বেও রিটের শুনানি করতে বলছেন কেন?’
এরপর আদালত খালেদা জিয়ার রিট আবেদনের বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনের পক্ষে অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলমকে শুনানি করতে বলেন। মাহবুবে আলম শুনানি শুরু করতে থাকলে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা আদালত বর্জন করে বেরিয়ে আসেন।
গত ১১ ডিসেম্বর (মঙ্গলবার) খালেদা জিয়ার তিনটি রিটের ওপর বিভক্ত আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিলে নির্বাচন কমিশনের আদেশ স্থগিত করে রুল জারি করেন।
বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. ইকবাল কবির এ আদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। এরপর নিয়ম অনুসারে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠালে তিনি উক্ত একক বেঞ্চ গঠন করেন।
এর আগে শুনানি শেষে গত ১০ ডিসেম্বর (সোমবার) বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ বিষয়ে আদেশের জন্য ১১ ডিসেম্বর দিন ধার্য করেন।
আদালতে খালেদা জিয়ার পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী। অপরপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। শুনানির সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন- ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘ইলেকশন এক্সপার্ট মিশনের’ আইন বিশেষজ্ঞ ইরিনি মারিয়া গোনারি।
এর আগে, গত ৯ ডিসেম্বর (রোববার) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় তার পক্ষে পৃথক তিনটি রিট করা হয়।
তার আগে গত ৮ ডিসেম্বর (শনিবার) প্রার্থিতা ফিরে পেতে কারাবন্দি খালেদা জিয়ার করা আপিল নামঞ্জুর করে দেয় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। যা পরবর্তীতে হাইকোর্টে গড়ায়।
সাজাপ্রাপ্ত হওয়ার কারণে গত ২ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের সময় খালেদা জিয়ার মনোনয়নপত্র বাতিল করে দেন সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং কর্মকর্তারা। পরে তাদের এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ ডিসেম্বর (বুধবার) নির্বাচন কমিশনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আপিল করেন খালেদার আইনজীবীরা। কিন্তু ইসি সে আপিলও নামঞ্জুর করেন।
তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে মনোনয়নপত্র দাখিল করেছিলেন।