চট্টগ্রামে নাশকতার মামলায় কারাবন্দী বিএনপি নেতাকে আসামী করে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করার ঘটনায় অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা চেয়েছেন নগরের চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম দাশ। চট্টগ্রাম মহানগর হাকিম আবু সালেম মোহাম্মদ নোমানের আদালতে গতকাল রোববার দুপুরে এই ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, নাশকতার অভিযোগে করা মামলায় ৬৩ দিন ধরে কারাগারে আছেন চট্টগ্রাম মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবুল হাশেম। কারাগারে যাওয়ার ১২ দিন পর ককটেল ছোড়ার একটি ঘটনার মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন করেছিল পুলিশ। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর আদালতে হাজির হয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেন মামলার বাদী সেই পুলিশ কর্মকর্তা। এরপর গ্রেপ্তার না দেখানোর আরেকটি আবেদন করেন তিনি।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাশকতার মামলায় গোয়েন্দা পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে গত ২২ অক্টোবর থেকে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে আছেন আবুল হাশেম। তাঁর বিরুদ্ধে ১২টি মামলা রয়েছে। তিনি কারাগারে থাকাকালীন তাঁকে ককটেল ছোড়ার একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখানোর জন্য গত বুধবার আদালতে আবেদন করেন নগরের চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অসীম দাশ।
আবেদনে বলা হয়, গত ২ নভেম্বর চান্দগাঁও থানা এলাকায় ককটেল ছোড়ার ঘটনায় হাশেম জড়িত বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশ। তাঁকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হোক।
ওই আবেদনের বিষয়ে শুনানির দিন ধার্য ছিল গতকাল। হাশেমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আসামির আইনজীবীরাও প্রস্তুত ছিলেন। কিন্তু শুনানি শুরু হওয়ার আগে হাশেমকে এই মামলায় গ্রেপ্তার না দেখানোর আবেদন করেন এসআই অসীম দাশ।
এ সময় আসামির আইনজীবী আবদুস সাত্তার আদালতকে বলেন, একের পর এক ‘গায়েবি’ মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তার করছে পুলিশ। সাজানো মামলায় গ্রেপ্তার দেখাতে গিয়ে পুলিশ নিজেই ফাঁদে পড়ে গেল। কারণ, ঘটনার দিন ২ নভেম্বর আসামি হাশেম কারাগারে ছিলেন। তাহলে তিনি কীভাবে ককটেল ছুড়ে মারার ঘটনায় জড়িত?
পরে আদালত এসআই অসীম দাশের কাছে কারণ জানতে চাইলে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি নিজের অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা চান। আদালত আসামি হাশেমকে এই মামলায় গ্রেপ্তার না দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
এর আগে ১২ ডিসেম্বর নগরের ডবলমুরিং থানার পূর্ব মুহুরীপাড়ায় ককটেল ছোড়ার ঘটনায় করা মামলায় নগরের উত্তর আগ্রাবাদ ওয়ার্ড বিএনপির আহ্বায়ক এস এম ফরিদুল আলমকে আসামি করে ডবলমুরিং থানার পুলিশ। অথচ তিনি নাশকতার মামলায় গত ২৬ অক্টোবর থেকে কারাগারে। ১৫ ডিসেম্বর প্রথম আলোতে প্রতিবেদন প্রকাশের পর ডবলমুরিং থানার পুলিশ মামলার এজাহার থেকে ফরিদুলের নাম বাদ দিতে আদালতে আবেদন করে।