২০১৮ সাল ছিল বাংলাদেশের বিচার বিভাগ তথা সুপ্রিম কোর্টের ইতিহাসে আলোচিত ও ঘটনাবহুল। বছরের প্রথম দিকে আপিল বিভাগের বিচারপতি মো. আব্দুল ওয়াহহাব মিঞার পদত্যাগ, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করা ছিল টক অব দ্য ক্যান্ট্রি। বছরের শেষদিকে জাতীয় নির্বাচনের নানান ইস্যু নিষ্পত্তি হয় উচ্চ আদালতে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার সাজা বেড়ে ১০ বছর হওয়া, প্রার্থিতা নিয়ে খালেদা জিয়ার রিট খারিজ, নির্বাচনে মনোনয়ন পাওয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌরসভার মেয়রদের মনোনয়নপত্র বাতিল, নির্বাচন কমিশনে বাতিল হওয়া প্রায় অর্ধশত প্রার্থীর উচ্চ আদালতে মনোনয়ন বহালের আদেশ আলোচনার জন্ম দেয়।
সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ:
এ বছরের ২ ফেব্রুয়ারি দেশের ২২তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। এ সংক্রান্ত একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মন্ত্রণালয়ের আইন ও বিচার বিভাগের সচিব আবু সালেহ শেখ মো. জহিরুল হক এই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৯৫ (১) অনুচ্ছেদে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে মহামান্য রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারক মাননীয় বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করিয়াছেন।
বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞার পদত্যাগ:
বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনকে প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করার দিনেই পদত্যাগ করেন আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
গত বছরের ১০ নভেম্বর প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার পদত্যাগের পর পদটি শূন্য হয়। এর আগে অক্টোবরে অসুস্থতাজনিত কারণে তিনি ছুটি নেন। পরে প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহহাব মিঞা।
খালেদার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর:
২০১৮ সালের ৩০ অক্টোবর জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা বাড়িয়ে ১০ বছরের কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। ওই মামলায় বিচারিক আদালতের রায়ে খালেদা জিয়ার পাঁচ বছরের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড হয়েছিল। বিচারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়ার করা আপিল খারিজ করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় গত ৮ ফেব্রুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ রায় দেন। রায়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। খালেদা জিয়ার বড় ছেলে ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান, প্রাক্তন সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, খালেদা জিয়ার প্রাক্তন মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ ও মমিনুর রহমানকে ১০ বছর করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। রায়ে খালেদা জিয়াসহ ছয় আসামির সবাইকে মোট ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা ৮০ পয়সা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়। অর্থদণ্ডের টাকা প্রত্যেককে সমঅঙ্কে প্রদান করার কথা বলা হয়।
কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ পৃথক আপিল করেন। ছয় আসামির মধ্যে কারাগারে রয়েছেন খালেদা জিয়া, কাজী সালিমুল হক কামাল ও শরফুদ্দিন আহমেদ।
হাইকোর্টে ১৮ বিচারপতি নিয়োগ:
বিদায়ী বছরের ৩০ মে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে নতুন করে ১৮ জনকে অস্থায়ী বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেয় সরকার।
নিয়োগ পাওয়া ১৮ জন হলেন- আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসা মো. আবু আহমাদ জমাদার, আইন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, নরসিংদীর জেলা ও দায়রা জজ ফাতেমা নজীব, ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. কামরুল হোসেন মোল্লা, ঢাকার জেলা ও দায়রা জজ এস এম কুদ্দুস জামান, ঢাকার বিভাগীয় বিশেষ জজ মো. আতোয়ার রহমান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম আব্দুল মবিন, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খিজির হায়াত, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মনিরুজ্জামান, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শশাংক শেখর সরকার, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মোহাম্মদ আলী, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মহি উদ্দিন শামীম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রিয়াজ উদ্দিন খান, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. খায়রুল আলম, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আহমদ সোহেল, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীর, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল খোন্দকার দিলীরুজ্জামান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. কে এম হাফিজুল আলম।
আপিল বিভাগে তিন বিচারপতি নিয়োগ:
২০১৮ সালের ৯ অক্টোবর হাইকোর্ট বিভাগ থেকে তিন বিচারপতিকে আপিল বিভাগে নিয়োগ দেন রাষ্ট্রপতি।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পাওয়া তিন বিচারপতি হলেন- জিনাত আরা, আবু বকর সিদ্দীকী ও মো. নুরুজ্জামান।
নতুন এ নিয়োগের ফলে আপিল বিভাগে বিচারপতির সংখ্যা ৭ জনে উন্নীত হয়।
বিচারপতি জিনাত আরা: বিচারপতি জিনাত আরা ১৯৫৩ সালের ১৫ মার্চ জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুন্সেফ হিসেবে জয়েন করেন। ১৯৯৫ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৩ সালে তিনি হাইকোর্ট বিভাগের অতিরিক্ত বিচারক হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। ২০০৫ সালের ২৭ এপ্রিল তিনি হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারক হন। তিনি বাংলাদেশের তৃতীয় নারী বিচারপতি এবং আপিল বিভাগের তৃতীয় নারী বিচারপতি হলেন।
বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী: বিচারপতি আবু বকর সিদ্দিকী ১৯৫৪ সালের ২৯ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএসসি ও এলএলবি পাস করে ১৯৭৯ সালে কুষ্টিয়া বার অ্যাসোসিয়েশনে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।১৯৮০ সালে তিনি জুডিশিয়াল সার্ভিসে মুন্সেফ হিসেবে যোগদান করেন। ১৯৯৭ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে পদোন্নতি পান। ২০০৯ সালে তিনি হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান। ২০১১ সালে তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন।
বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান: বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ১৯৫৬ সালের ১ জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে তিনি সুনামগঞ্জ, নেত্রকোনা ও কিশোরগঞ্জ সাব-ডিভিশনে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করেন।
মো. নূরুজ্জামান ১৯৮৩ সালে জেলা জজ আদালতের তালিকাভুক্ত আইনজীবী হন। ১৯৮৭ সালে তিনি হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন।
২০০৯ সালে হাইকোর্টে অতিরিক্ত বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পান মো. নূরুজ্জামান। ২০১১ সালে তিনি হাইকোর্টের স্থায়ী বিচারপতি হন।
প্রার্থিতা নিয়ে খালেদার রিট খারিজ:
গত ১৭ অক্টোবর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ফেনী-১, বগুড়া-৬ ও ৭ আসনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিট খারিজ করেদেন হাইকোর্ট। এর ফলে খালেদা জিয়া নির্বাচনে অংশ নিতে পারবেন না। বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এর আগে খালেদা জিয়ার প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে করা রিট আবেদনের ওপর গত ১১ডিসেম্বর দ্বিধাবিভক্ত আদেশ দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ দ্বিধাবিভক্ত এ আদেশ দেন। যার ফলে মামলাটির নথি প্রধান বিচারপতির কাছে যায়। এর পর মামলাটি শুনতে বিচারপতি জে বি এম হাসানের একক বেঞ্চ গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি। কিন্তু এই আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবী শুনানি করতে অনাস্থা প্রকাশ করলে আদালত তা লিখিতভাবে আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
উপজেলা চেয়ারম্যানদের প্রার্থিতা বাতিলের আদেশ বহাল:
২৪ ডিসেম্বর উপজেলা চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ না করায় বিএনপি থেকে মনোনয়ন পাওয়া ৮ প্রার্থীর মনোনয়ন বাতিলের আদেশ বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার আদালত। প্রার্থিতা হারানো এসব প্রার্থীরা হলেন: জামালপুর-৪ আসনের ফরিদুল কবির তালুকদার, জয়পুরহাট-১ আসনের মো. ফজলুর রহমান, ঝিনাইদহ-২ আসনের এম এ আব্দুল মজিদ, রাজশাহী-৬ আসনের আবু সাঈদ চাঁদ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪ আসনের ইঞ্জিনিয়ার মোসলেম উদ্দিন, ঢাকা-১ আসনের প্রার্থী খন্দকার আবু আশফাক এবং ঢাকা-২০ আসনের তমিজ উদ্দিন। এছাড়া, ময়মনসিংহ-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী মাহমুদ হাসান সুমনের মনোনয়নপত্র বাতিলের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত।
ইমরান এইচ সরকার ও হিরো আলমের মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দশ:
ডিসেম্বর মাসেই গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার, হিরো আলমসহ প্রায় অর্ধশত প্রার্থীর মনোনয়নপত্র গ্রহণের জন্য ইসিকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
এর আগে গত ৭ নভেম্বর স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ১ শতাংশ ভোটারের স্বাক্ষর উপস্থাপনে গড়মিল, স্বাক্ষর জালিয়াতিসহ একাধিক অভিযোগে তাদের মনোনয়নপত্র বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট করেন প্রার্থীরা।
কলরেট বাড়ানো ও কলড্রপে চার্জের ওপর হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা:
বিদায়ী বছরের ১৩ ডিসেম্বর পুনরায় মোবাইলের কলচার্জ বাড়ানো ও কলড্রপে টাকার কাটার ওপর নিষেধাজ্ঞা দেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীদের অধিকার সুরক্ষায় বিবাদীদের ব্যর্থতা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এই মর্মে রুল জারি করা হয়েছে। এছাড়া, অনাবশ্যক ক্ষুদে বার্তা পাঠানো কেন বন্ধ করা হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মোবাইলের বর্তমান কলরেট পর্যালোচনার জন্য বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়।
বিচারপতি তারিক উল হাকিম ও বিচারপতি মো. সোহরাওয়ারদীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশসহ এ রুল জারি করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমাতুল করিম।
চার সপ্তাহের মধ্যে টেলিযোগাযোগ সচিব, বিটিআরসির চেয়ারম্যান, সেক্রেটারি, মোবাইল অপারেটর গ্রামীণ ফোন লিমিটেড, এয়ারটেল লিমিটেড, রবি আজিয়াটা লিমিটেড, বাংলা লিংক লিমিটেড ও টেলিটক কর্তৃপক্ষকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
জনস্বার্থে হাইকোর্টে রিট আবেদনটি দায়ের করেন আইন সাংবাদিকদের সংগঠন ল’ রিপোটার্স ফোরামের সদস্য এম. বদিউজ্জামান, মেহেদী হাসান ডালিম, মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমদ ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রাশিদুল হাসান।
রিটকারীদের পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান বলেন, এমনিতেই পার্শ্ববর্তী দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশে মোবাইল কলচার্জ বেশি। পরে গ্রাহকের মতামত না নিয়ে চলতি বছরের আগস্ট মাসে অতিরিক্ত কলরেট চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা গ্রাহকদের অধিকারের পরিপন্থী ও বেআইনি।
ইডেনের মিতা হত্যা মামলায় সব আসামি হাইকোর্টে খালাস:
বিদায়ী বছরের গত ১৩ নভেম্বর ইডেন কলেজের ছাত্রী সাদিয়া নূর মিতা হত্যা মামলায় বিচারিক আদালতে দণ্ডপ্রাপ্ত ৮ আসামিকে খালাস দেন হাইকোর্ট।
ডেথ রেফারেন্স ও আসামিদের আপিল শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি এ এস এম আব্দুল মোবিনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল আবুল কালাম আজাদ খান।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মনিরুজ্জামান রুবেল বলেন, এই মামলায় কোন চাক্ষুষ সাক্ষী না থাকায় এবং একমাত্র স্বীকারোক্তিকারী আসামি শ্রাবণীর সাক্ষ্য আদালতের কাছে গ্রহণযোগ্য না হওয়ায় উচ্চ আদালত সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন।
২০১৩ সালের ১৩ মার্চ ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪ এই মামলায় আসামী নিপুন, মামুন ও ডগু খন্দকারকে মৃত্যুদণ্ড, তুষার কাজী, জনি, শ্রাবণী ও শেখ নাজমুলকে যাবজ্জীবন এবং আসামি মনিকে ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। রাইজিংবিডি