নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলী ইউনিয়নের এক গ্রামে স্বামী-সন্তানকে বেঁধে রেখে এক নারীকে মারধর ও গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার নারীর স্বামী গত সোমবার রাতে সুবর্ণচরের চরজব্বার থানায় এ মামলা করেন। তবে তাঁরা আগে ভোট দেওয়া নিয়ে ঝামেলার কথা জানালেও মামলায় তা উল্লেখ নেই। মামলায় বলা হয়েছে ‘পূর্ববিরোধের’ কথা।
চরজব্বার থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানিয়েছেন, একই এলাকার মোশারফ, সালাউদ্দিন, বাদশা আলম ওরফে কুড়াইল্যা বাসু ও সোহেলসহ নয়জন মামলার আসামি। মামলার পর রাতেই আসামি বাদশা আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। আসামি ঘটনার বিষয়ে কিছু স্বীকার করেননি। আদালতের কাছে সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
ওই নারীর স্বামী গণমাধ্যমকে বলেন, সোমবার রাতে পুলিশ তাঁকে মামলা করার জন্য হাসপাতাল থেকে গাড়িতে করে থানায় নিয়ে যায়। তিনি সেখানে গিয়ে ঘটনার বর্ণনা দেন। পুলিশ তাঁর বর্ণনা অনুযায়ী এজাহার লিখে আসামিদের নাম ঠিক আছে কি না জিজ্ঞেস করলে তিনি তাতে সম্মতি দেন। পুলিশ তাঁকে পুরো এজাহার পড়ে শোনায়নি। তিনিও পড়ালেখা না জানায় এজাহার পড়ে দেখতে পারেননি।
এজাহারে ভোটকেন্দ্রে ভোট দেওয়া নিয়ে ঝামেলার বিষয়টি বাদ পড়া প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ওসি বলেন, বাদী যা যা বর্ণনা করেছেন, তা-ই উল্লেখ করা হয়েছে। এখন যদি তিনি কিছু বাদ গেছে বলে দাবি করেন, তদন্তে সেটিও খতিয়ে দেখা হবে।
নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক খলিল উল্যাহ গণমাধ্যমকে বলেন, চিকিৎসাধীন নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে নির্যাতনের চিহ্ন আছে। তবে ডাক্তারি পরীক্ষার ফল বুধবার (আজ) নাগাদ পাওয়া গেলে ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
নির্যাতনের শিকার নারী বলেন, ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা সবাই একই এলাকার চরজুবলী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য রুহুল আমিনের লোক। তাঁরা সবাই নির্বাচনে নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন। ভোটের দিন আসামিরা তাঁকে তাঁদের পছন্দের প্রতীকে ভোট দিতে বলেন। তিনি তাতে রাজি না হলে এ নিয়ে তর্কাতর্কির একপর্যায়ে যুবকেরা তাঁকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এরপর ওই দিন রাতে বাড়িতে গিয়ে তাঁরা মারধর ও ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেন তিনি।
তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন
এ ঘটনায় তিন সদস্যের তথ্যানুসন্ধান কমিটি গঠন করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। গতকাল সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়াও ঘটনার নিন্দা ও জড়িত ব্যক্তিদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ নারী মুক্তি কেন্দ্র ও দেশের মালিকানা ফিরে পেতে সংগ্রামরত জনগণ। প্রথম আলো