ঘুষ গ্রহণের মাধ্যমে দুর্নীতির দায়ে চার বছর দণ্ড দিয়ে হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে লিভ টু আপিল করেছেন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা। একই সঙ্গে জামিন আবেদনও করেছেন তিনি।
আজ মঙ্গলবার (৮ জানুয়ারি) আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান এ বিষয়ে শুনানির জন্য ১৩ জানুয়ারি পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
আদালতে নাজমুল হুদার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট সিগমা হুদা। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে খুরশীদ আলম খান বলেন, হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপিল দায়ের করেছেন। একই সঙ্গে জামিন আবেদনও করেছেন। চেম্বার জজ ১৩ জানুয়ারি আবেদনের শুনানির জন্য পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে পাঠিয়েছেন।
৬ জানুয়ারি এ মামলায় আত্মসমর্পণের পর নাজমুল হুদাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছিলেন ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-২-এর বিচারক এইচ এম রুহুল ইমরান।
নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদার বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ২১ মার্চ দুদকের উপ-পরিচালক মো. শরিফুল ইসলাম ধানমন্ডি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, সাপ্তাহিক পত্রিকা ‘খবরের অন্তরালে’র জন্য মীর জাহের হোসেনের কাছ থেকে ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ঘুষ নেন নাজমুল হুদা ও তার স্ত্রী সিগমা হুদা।
২০০৭ সালের ২৭ আগস্ট ঢাকার বিশেষ জজ আদালত মামলাটির রায়ে নাজমুল হুদাকে সাতবছরের কারাদণ্ড ও আড়াই কোটি টাকা জরিমানা করেন। তার স্ত্রী সিগমা হুদাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে নাজমুল হুদা ও সিগমা হুদা আপিল করলে ২০১১ সালের ২০ মার্চ তাদের খালাস দেন হাইকোর্ট।
পরে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ১ ডিসেম্বর খালাসের রায় বাতিল করে হাইকোর্টে পুনঃশুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। ২০১৬ সালের ১৩ এপ্রিল আদেশ পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদনও খারিজ করে দেন সর্বোচ্চ আদালত।
এরপর হাইকোর্টে এ মামলার পুনঃশুনানি নেওয়া হয়। সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আদেশে পুনঃশুনানির পর ২০১৭ সালের ৮ নভেম্বর বিচারপতি ভবানী প্রসাদ সিংহ ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
রায়ে নাজমুল হুদার সাজা কমিয়ে চার বছর কারাদণ্ড দেন হাইকোর্ট। একই রকম মামলায় তিন বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত তার স্ত্রী সিগমা হুদার কারাগারে থাকাকালীন সময়কে সাজা হিসেবে গণ্য করেছেন।
বিচারিক আদালত যেদিন রায় গ্রহণ করবেন, সেদিন থেকে ৪৫ দিনের মধ্যে নাজমুল হুদাকে আত্মসমর্পণের কথা বলা হয়েছে।
গত বছরের ১৮ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে ৬৭ পৃষ্ঠার রায়টি প্রকাশ পায়। রায় অনুসারে গত ৬ জানুয়ারি আত্মসমর্পণ করেন তিনি।