জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসকে আট সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মির্জা আব্বাস দম্পতির আগাম জামিন চেয়ে আবেদনের শুনানি নিয়ে আজ সোমবার (১৪ জানুয়ারি) বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি এস এম কুদ্দুস জামানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে আট সপ্তাহ পর তাঁদের ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলেছেন উচ্চ আদালত।
এর আগে ৭ জানুয়ারি প্রায় ২১ কোটি টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাস ও তাঁর স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা করে দুদক।
এ মামলায় আজ আদালতে মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস হাজির হয়ে আগাম জামিনের আবেদন জানান।
আদালতে আব্বাস দম্পতির পক্ষে শুনানি করেন, আইনজীবী জয়নুল আবেদীন। সঙ্গে ছিলেন, আইনজীবী জহিরুল ইসলাম সুমন।
দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
পরে আইনজীবী জহিরুল ইসলাম সুমন গণমাধ্যমকে বলেন, দুদকের মামলায় আট সপ্তাহের আগাম জামিন পেয়েছেন মির্জা আব্বাস ও আফরোজা আব্বাস। তাঁদের আগাম জামিনের আবেদন নিষ্পত্তি করে এ আদেশ দেওয়া হয়। আট সপ্তাহ পর তাঁদের ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়েছে।
দুদকের মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আফরোজা আব্বাস আয়কর নথিতে নিজেকে একজন হস্তশিল্প ব্যবসায়ী হিসেবে উল্লেখ করলেও পাসপোর্টে নিজেকে গৃহিণী উল্লেখ করেছেন। তাঁর নিজের আয়ের কোনো বৈধ উৎস নেই। দুদকে জমা দেওয়া আফরোজা আব্বাসের সম্পদ বিবরণী যাচাইকালে দুদক তাঁর ২০ কোটি ৭৬ লাখ ৯২ হাজার ৩৬৩ টাকার সম্পদ পায়।
দুদকের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, আফরোজা আব্বাস দুদকে যে সম্পদের হিসাব জমা দিয়েছেন, তার সপক্ষে কোনো দালিলিক তথ্য প্রমাণ দিতে পারেননি। তিনি অবৈধভাবে অর্জিত জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ হস্তান্তর, রূপান্তর ও অবস্থান গোপন করার উদ্দেশ্যে দালিলিক প্রমাণবিহীন ভুয়া ঋণ নেওয়ার তথ্য দিয়েছেন।
এর আগে সাবেক পূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে আয়ের সঙ্গে সংগতিবিহীন ৭ কোটি ৫৪ লাখ ৩২ হাজার ২৯০ টাকার সম্পদ অর্জন এবং ৫৭ লাখ ২৬ হাজার ৫৭১ টাকার সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট মামলা করে দুদক। ২০০৮ সালের ১৪ মে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। এই মামলার বিচার চলছে।
সাংবাদিকদের জন্য মিরপুরে প্লট বরাদ্দে অনিয়মের অভিযোগে তৎকালীন গণপূর্তমন্ত্রী মির্জা আব্বাস, তৎকালীন গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আলমগীর কবীরসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে ২০১৪ সালের ৬ মার্চ শাহবাগ থানায় আরেকটি মামলাটি করে দুদক। এতে ১৫ কোটি ৫২ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা রাষ্ট্রের আর্থিক ক্ষতির অভিযোগ আনা হয়। এই মামলায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর মির্জা আব্বাসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।