প্রধানমন্ত্রীসহ বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান প্রধানের সই জাল করে বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতকারী একটি চক্রের মূলহোতাসহ ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে সিআইডি।
আজ মঙ্গলবার (১৫ জানুয়ারি) দুপুরে রাজধানীর মালিবাগের সিআইডির কার্যালয়ে এক প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (সিরিয়াস অ্যান্ড হোমিসাইডাল স্কোয়াড) সৈয়দা জান্নাত আরা।
গত ২৯ নভেম্বর এবং গতকাল সোমবার (১৪ জানুয়ারি) রাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের লোগোযুক্ত চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাল সইসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, দুদক চেয়ারম্যান, এনবিআরের চেযারম্যান, এনএসআইয়ের প্রধানের জাল সই করে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ—সিআইডির হোমিসাইডাল স্কোয়াড।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছে মো. হেলালউদ্দিন (৫৫), মো. এনামুল হক (৪৮) এবং নাজমুল হাবিব (৫৪)। তবে তদন্তের স্বার্থে সোমবার রাতে গ্রেফতার আসামিদের নাম প্রকাশ করা হয়নি।
সৈয়দা জান্নাত আরা জানান, গ্রেফতারের সময় আসামিদের কাছ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জাল সইসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর, দুদক চেয়ারম্যান, এনবিআরের চেযারম্যান, এনএসআইয়ের প্রধানের জাল সইসহ জাল প্যাডের পাতা, বাংলাদেশ ব্যাংকে ভুয়া ৫৪ হাজার কোটি টাকার যাচাইকৃত কপি, প্রধানমন্ত্রীকে জড়িয়ে হেলালের বিভিন্ন মানহানিকর কথাবার্তার ভিডিও ক্লিপ এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত পাঁচটি মোবাইল জব্দ করা হয়।
সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, ‘আসামিদের গ্রেফতারের পর জানা যায়, এই জালিয়াতি চক্রটি বাংলাদেশ ব্যাংকের ভুয়া ৫৪ হাজার কোটির টাকার যাচাই কপি তৈরি করে জনমনে বিশ্বাস স্থাপন করাতো। এই ৫৪ হাজার কোটি টাকা বাংলাদেশ ব্যাংকে কথিত ফরিদুজ্জামান সেলিমের অ্যাকাউন্টে আছে। সে ফ্রান্সের এলসিএল ব্যাংক থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকে টাকা পাঠায়, যা কিনা পুরোটাই ভুয়া।’
তিনি বলেন, ‘চক্রটি সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়নের কথা টাগের্ট করা মানুষকে জানাতো, প্রয়োজন মাফিক তারা প্রধানমন্ত্রীর সইসহ কার্যালয়ের প্যাডে ওই প্রকল্পের কাজের আদেশনামা দেখাতো এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের ৫৪ হাজার কোটির টাকার যাচাই কপি দেখাতো।’
সিআইডির এই বিশেষ পুলিশ সুপার বলেন, ‘হেলালউদ্দিন জাল সই চক্রের মূল হোতা। সে প্রধানমন্ত্রীর জাল সই তৈরি করতো। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের লোগো চিঠি এক কম্পিউটারের দোকান থেকে মাত্র ৫০০ টাকার বিনিময়ে প্রিন্ট করে। তারা প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি নষ্ট করার লক্ষ্যে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে পরিকল্পনা করে জালিয়াতি করছিল।’
সৈয়দা জান্নাত আরা বলেন, ‘ফরিদুজ্জামান সেলিমকে গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। খুব শিগগিরই তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।’