জন্ম তারিখ লুকিয়ে বয়সের সঠিক তথ্য গোপন করে নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ইউনিটে (সিএমএমইউ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে চাকরি নেওয়ার অভিযোগে মো. তোজাম্মেল হোসেনের মামলা বাতিলের আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।
একইসঙ্গে মামলার বিষয়ে বিচারিক আদালতের দেয়া স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে ছয় মাসের মধ্যে তা নিষ্পত্তি করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
এই আদেশের ফলে বিচারিক আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাটি চলতে আর কোনো বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
হাইকোর্টের বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ সোমবার (২১ জানুয়ারি) এই রায় দেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল হেলেনা বেগম চায়না। দুদকের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. নওশের আলী মোল্লা। আর আসামিপক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদা খান।
মামলার বিবরণী থেকে জানা গেছে, এর আগে ১৯৯৫ সালের এপ্রিলে নির্মাণ ও রক্ষণাবেক্ষণ ব্যবস্থাপনা ইউনিটে (সিএমএমইউ) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী পদে নিয়োগ প্রসঙ্গে পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে প্রার্থীর বয়স অনূর্ধ্ব ৪৫ বছর উল্লেখ করা হয়। কিন্তু তোজাম্মেল হোসেন তার এসএসসি সার্টিফিকেট অনুযায়ী জন্ম তারিখ ১৯৫০ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি, অর্থাৎ তার আসল বয়স ৪৫ বছর দুই মাস দুই দিন হওয়া সত্ত্বেও জালিয়াতির মাধ্যমে নিজের জন্ম তারিখ ১৯৫১ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি উল্লেখ করেন। ফলে তার বয়স দাঁড়ায় ৪৪ বছর দুই মাস দুই দিন।
তবে ভুয়া জন্ম তারিখের মাধ্যমে বয়স কমিয়ে দীর্ঘ ৯ বছর চাকরি করার পর বিষয়টি জানাজানি হলে তোজাম্মেলের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হয় এবং তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। পরে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরোর পরিদর্শক মো. আবুল হোসেন ২০০৪ সালের ১৬ জুন রমনা থানায় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দায়ের করেন। এরপর মামলাটি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিট ম্যাজিস্টেট আদালতে তদন্তের পর্যায়ে উঠে আসে। কিন্তু এসময় মামলাটি বাতিল চেয়ে তোজাম্মেল হাইকোর্টে আবেদন করেন।
পরে সেই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৫ সালের ১৫ জানুয়ারি হাইকোর্ট মামলাটি কেন বাতিল করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন এবং মামলাটির কার্যক্রমের ওপর স্থগিতাদেশ দেন। তবে প্রায় এক যুগেরও বেশি সময় পর ওই রুলের শুনানি নিয়ে সোমবার (২১ জানুয়ারি) মামলাটি খারিজ করে দেন হাইকোর্ট। পাশাপাশি দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মামলাটি ছয় মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে নির্দেশ দেন আদালত।