ইসলামে পৌত্তলিকতা নিষিদ্ধ। তাই ধর্মান্তরণ না হলে মুসলিম পুরুষের সঙ্গে হিন্দু নারীর বিবাহ ইসলামি মতে অসিদ্ধ (ইরেগুলার)। সে কথা মেনে নিয়েও ওই বিবাহজাত সন্তানকে বৈধ বলেই স্বীকৃতি দিল ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
মহম্মদ ইলিয়াস এবং ভাল্লিয়াম্মা নামের এক দম্পতির সন্তানকে বৈধ ঘোষণা করে গতকাল মঙ্গলবার (২২ জানুয়ারি) বিচারপতি এন ভি রামান্না এবং বিচারপতি এম এম শান্তনাগৌরদার-এর বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। খবর আনন্দবাজার পত্রিকার
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামি মতে বিয়ে তিন রকম— সিদ্ধ, অসিদ্ধ, অবৈধ। সিদ্ধ বিয়ে ভেঙে গেলে তা বাতিল বলে গণ্য। আর রীতিবিরুদ্ধ ভাবে বিয়ে হয়ে থাকলে তা অসিদ্ধ। মুসলিম পুরুষের সঙ্গে হিন্দু নারীর বিয়ে, অর্থাৎ ধর্মান্তর না হওয়া হিন্দু নারীর বিয়ে ইসলামি মতে অসিদ্ধ। আদালত সে কথা মেনেও নিয়েছে। কিন্তু মহম্মদ ইলিয়াস এবং ভাল্লিয়াম্মার সন্তানকে বৈধ সন্তান বলেই গণ্য করতে হবে এবং বৈধ সন্তানের যাবতীয় অধিকার দিতে হবে বলে বিচারপতিদের রায়।
আদালতের পর্যবেক্ষণ, বিয়ের সময় ভাল্লিয়াম্মা হিন্দু ছিলেন বলে ইলিয়াসের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ধর্মমতে সিদ্ধ নয়, আবার আইনের চোখে বেআইনিও নয়। এটা শুধুমাত্র ‘অসিদ্ধ’ বিয়ে। সে ক্ষেত্রে বিধবা ভাল্লিয়াম্মা ইসসামি আইনে সম্পত্তির উত্তরাধিকার পাবেন না। কিন্তু নিজের ভরণপোষণের অর্থ পাবেন। তবে তাঁর সন্তানকে কোনও রকম বৈষম্যের মধ্যে ফেলা যাবে না। বৈধ সন্তানের যা কিছু অধিকার প্রাপ্য, ভাল্লিয়াম্মার সন্তান শামসুদ্দিনও তা-ই পাবেন।
শামসুদ্দিনই পিতার সম্পত্তির অধিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তাঁর তুতো ভাইয়েদের দাবি ছিল, তিনি সম্পত্তির দাবিদার নন। কেরল হাইকোর্ট রায়ে শামসুদ্দিনের অধিকারকেই স্বীকৃতি দিয়েছিল। শীর্ষ আদালত সেই রায়ই বজায় রাখল।