ব্যারিস্টার শাহ আলী ফরহাদ:
গতকাল থেকেই ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর দুর্নীতি ধারণাসূচক সূচক বা করাপশন পারসেপশন ইনডেক্স নিয়ে বেশ কথা হচ্ছে। বাংলাদেশের ৪ ধাপ অবনতি বলা হচ্ছে এই সূচকে। যেখানে বর্তমানে দুর্নীতি দমনের ক্ষেত্রে আমরা সরকারের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি ঠিক তখনি টিআই হাজির। এই সূচকের প্রক্রিয়া নিয়ে আমার কিছু মন্তব্য আছে।
প্রথমত, টিআই’র দুর্নীতি সূচক এর মেথডোলজি বেশ অস্বচ্ছ ও ত্রুটিপূর্ণ। অর্থাৎ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল এর নিজেদেরই ট্রান্সপারেন্সির অভাব পরিলক্ষিত হয়। কিছু কথাকথিত বিশেষজ্ঞ এবং ব্যবসায়ীদের মতামতের উপর ভিত্তি করেই এই সূচক তৈরী করা হয়। অর্থাৎ সত্যিকার অর্থে এই সূচক দুর্নীতি বিষয়ে কোনো গ্রহণযোগ্য গবেষণা প্রতিবেদন বা জনমত জরিপ না। বাংলাদেশের আপামর জনগণ দুর্নীতি বিষয়ে কি ভাবছে তার প্রতিফলন কিন্তু আমরা এই সূচক থেকে পাই না।
দুর্নীতি বিষয়ে আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতি সম্পন্ন বিশেষজ্ঞ এলেক্স কবহ্যাম ফরেন পলিসি ম্যাগাজিনে একটি আর্টিকেল লিখেছিলেন যেখানে তিনি তুলে ধরেছিলেন কেন কিছু গুটিকয়েক মানুষের মতামতের ভিত্তিতে একটি দেশের সামগ্রিক দুর্নীতির অবস্থা যাচাই করা সম্ভব না। নিজেদের তৈরী করা এলাকাভিত্তিক কমিটির সদস্য ও নিজেদের নেটওয়ার্ক এর মধ্যে থাকা ব্যবসায়ী বা তথাকথিত বিশেষজ্ঞদের মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরী করা হয় এই সূচক। এই ত্রুটিপূর্ণ কৌশল ব্যবহার করে একটি দেশের দুর্নীতির প্রকৃত অবস্থা যাচাই করা অসম্ভব। দুর্নীতি কিভাবে একটি দেশের নাগরিকদের উপর প্রভাব ফেলছে তাও নির্ণয় করা সম্ভব নয় এই ত্রুটিপূর্ণ কৌশলে।
তাই আস্থা রাখুন শেখ হাসিনাতেই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যেই লড়াই উনি শুরু করেছেন তা সফল করতে দুর্নীতি দমন কমিশন ও সরকারকে সহায়তা করুন।
লেখক : আইনজীবী, গবেষক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী