রাজশাহী জেলা আইনজীবী সমিতির ১৬ জনকে সংগঠনের কল্যাণ তহবিলের সদস্যপদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিএনপিপন্থী এসব আইনজীবী ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত সমিতির নেতৃত্বে ছিলেন।
বিপুল অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে রাজশাহী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১৬ আইনজীবীর বিরুদ্ধে এ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। সোমবার (৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরের পর বার সমিতির বিশেষ সাধারণ সভায় এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
সভার শুরুতে বার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অভিযুক্ত ১৬ আইনজীবীর বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ ও তাদের প্রদত্ত জবাব পড়ে শোনান। পরে সাধারণ সভায় উপস্থিত আইনজীবীদের মতামতের ভিত্তিতে রাজশাহী বার সমিতির সভাপতি লোকমান আলী সমিতির গঠনতন্ত্রের ৩৭ ধারার বিধান মতে অভিযুক্ত ১৬জনের শাস্তি ঘোষণা করেন।
অভিযুক্ত আইনজীবীরা হলেন, রাজশাহী বার সমিতির সাবেক সভাপতি ও কল্যাণ তহবিল স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান আবুল কাশেম, এ্যাডভোকেট মোজাম্মেল হক। সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমসেদ আলী-মাইনুল আহসান (পান্না), আফতাবুর রহমান, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (কল্যাণ তহবিল) পারভেজ তৌফিক জাহেদী, এ্যাডভোকেট জানে আলম, সানোয়ার কবির খান ঈশা, হাবিবুর রহমান-৩, সাবেক সম্পাদক (হিসাব) শামসুল হক, মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, আব্দুর রাজ্জাক সরকার, সাবেক সম্পাদক (অডিট) আব্দুল মতিন চৌধুরী (রুমি), মাহবুবুর রহমান (রুমন), আদিব ইমাম ডালিম ও সাবেক চেয়ারম্যান (কল্যাণ তহবিল স্ট্যান্ডিং কমিটির) এরশাদ আলী (ইশা)।
এদের মধ্যে সাবেক সাধারণ সম্পাদক জমসেদ আলী-১, মাইনুল হাসান পান্না, আফতাবুর রহমান রাজশাহী বার সমিতির সাধারণ সদস্য পদ থেকে ৩ বছরের জন্য সাসপেন্ড হয়েছেন। সাবেক সম্পাদক (হিসাব) শামসুল হক, মুন্সি আবুল কালাম আজাদ, আব্দুর রাজ্জাক সরকার, সাবেক সম্পাদক (অডিট) আব্দুল মতিন চৌধুরী (রুমি), মাহবুবুর রহমান (রুমন), আদিব ইমাম ডালিমকে রাজশাহী বার সমিতির সাধারণ সদস্য পদ থেকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে। এ ছাড়াও বাকি ৭ জনসহ রাজশাহী বারের উপরোক্ত ১৬ সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তার কল্যাণ তহবিলের সদস্য পদ বাতিল করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১০ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তারা নির্বাহী কর্মকর্তা পদে ছিলেন। এ সময় তারা এক কোটি ২৮ লাখ তিন হাজার ৬৮১ টাকা আত্মসাত করেন। আত্মসাতকৃত টাকা অভিযুক্তরা ৩০দিনের মধ্যে বার সমিতিতে ফেরত না দিলে তাদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। সিদ্ধান্তে আরও উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্ত ১৬জন আত্মসাতকৃত টাকা বার সমিতিতে জমা প্রদান করে তাদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কল্যাণ তহবিল স্ট্যান্ডিং কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট এরশাদ আলী (ইশা) বলেন, আওয়ামী লীগ এখন ক্ষমতায় আছে, তাই তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
রাজশাহী এ্যাডভোকেট বার সমিতির সভাপতি বলেন, আজ যে তথ্য সকলের সামনে উন্মুক্ত করা হয়েছে তাতে সাধারণ আইনজীবীদের কাছে অভিযুক্তদের মুখোশ উন্মুক্ত হয়েছে। আর যে শাস্তির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে তা তারই প্রতিফলন মাত্র। বারের সদস্যদের সর্বসম্মতিক্রমে এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তাদের জন্য ফিরে আসার পথও উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। তারা চাইলে বারের আত্মসাতকৃত টাকা জমা দিয়ে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের জন্য আবেদন করতে পারবেন।