ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য ও ঢাকা জেলা জজ আদালতের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. মুসলেম উদ্দিন ইন্তেকাল করছেন (ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন)।
আজ শনিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আজগর আলী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি ইন্তেকাল করেন। আজ সন্ধায় এশার নামাজের পর মাতুয়াইল কবরস্থানে মরহুমের জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
তিনি মৃত্যুকালে ২ ছেলে ও ১ এক কন্যা রেখে গেছেন। তার বড় ছেলে মুমিন উদ্দিন ব্যবসায়ী, জহির উদ্দিন আইনজীবী। তিনি ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য। মেয়ে-মুসলেমা জেসমিন।
ঢাকা বারের আইনজীবীদের পক্ষ থেকে মরহুমের রুহের মাগফিরাত কামনা করে এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জ্ঞাপন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। তিনি জানান, বীরমুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট মো. মুসলেম উদ্দিনের বাড়ি মাতুয়াইল, থানা-যাত্রাবাড়ি, ঢাকা। জন্ম-৩০ এপ্রিল ১৯৫২। মাতুয়াইল প্রাইমারি স্কুল থেকে পঞ্চম শ্রেণি, টিপু সুলতান রোডের গ্র্যাজুয়েট হাইস্কুল থেকে ’৬৪ সালে এসএসসি পাস করেন। ১৯৭০ সালে সাবেক কায়েদে আজম কলেজ বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করেন।
মুসলেম উদ্দিন একই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগে ভর্তি হন। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের ২ নম্বর সেক্টরে সেক্টর কমান্ডার মেজর হায়দারের অধীনে গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। যুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থেকে ঢাকায় প্রবেশের ১১০০ ভোল্টের বিদ্যুৎ লাইন বিচ্ছিন্ন করার সময় সরাসরি অংশগ্রহণ তার জীবনের উল্লেখযোগ্য স্মৃতিময় ঘটনা।
স্বাধীনতা-পরবর্তী শেখ ফজলুল হক মণির নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ গঠনে তিনি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন। তারপর ডেমরায় মিল্কভিটায় প্রশাসনিক কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। চাকরিতে যোগদানের পর তিনি সাবেক পাকিস্তান নেভির পিটি অফিসার রুপগঞ্জ নিবাসী মরহুম আবদুল আজিজের মেয়ে জোহরা বেগমকে বিয়ে করেন।
তিনি ১৯৮০ সালে সেন্টাল ল’ কলেজ থেকে এলএলবি পাস করেন। বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের সনদ নিয়ে তিনি চাকরি ছেড়ে ১৯৮৩ সালের ২৩ অক্টোবর সনে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সদস্য হয়ে আইনপেশায় নিয়োজিত হন। ১৯৮৪ সালে ঢাকা মেট্রো বারের সদস্যভুক্ত হন এবং ১৯৯৫ সালে ঢাকা মেট্রো বারের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।
মুসলেম উদ্দিন বর্তমানে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে অতিরিক্ত পিপি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সমাজকল্যাণ সম্পাদক। শারীরিকভাবে অনেকটা অসুস্থ হয়ে পড়লেও তিনি নিয়মিত কোর্টে আসতেন এবং আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সকল কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতেন।
তিনি ১৯৭০ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে জাতীয় নির্বাচনে তার মনোনীত এজেন্ট হিসেবে তেজগাঁও নির্বাচনী এলাকায় কাজ করেন। তখন বঙ্গবন্ধু পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য (এমএনএ) নির্বাচিত হয়েছিলেন।