বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) এর পরীক্ষায় ৫২টি প্রতিষ্ঠানের ভেজাল ও নিম্নমাণের পণ্য ধরা পড়ার পরও ওই সব পণ্য জব্দ না করা, সেগুলো বাজার থেকে প্রত্যাহারের ব্যবস্থা না নেয়া ও প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ না করায় দুই মন্ত্রণালয়ের সচিব ও তিন প্রতিষ্ঠানের প্রধানকে আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংস্থা কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস)।
আজ সোমবার (৬ মে) দুপুরে সংগঠনের পক্ষে এ আইনি নোটিশ পাঠিয়েছেন সিসিএস এর আইন উপদেষ্টা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাবউদ্দিন খান।
ওইসব প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পণ্যসমূহ কেন জব্দ করা হবে না বা বাজার থেকে কেন প্রত্যাহার করা হবে না এবং তাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না তা জানতে চেয়ে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্স অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)-এর মহাপরিচালক (ডিজি), বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালকের প্রতি নোটিশটি পাঠানো হয়।
আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নোটিশের জবাব না দিলে হাইকোর্টে রিট আবেদন করা হবে বলে গণমাধ্যমকে জানান কনসাস কনজুমার্স সোসাইটি (সিসিএস) নির্বাহী পরিচালক পলাশ মাহমুদ।
নোটিশে বলা হয়েছে, গত ৩ মে ও ৪ মে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে উল্লেখ করা হয়েছে, বিএসটিআই সম্প্রতি ২৭ ধরনের ৪০৬টি খাদ্য পণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়েছে যেখানে ৫২টি প্রতিষ্ঠানের পণ্য নিম্ন মানের ও ভেজাল রয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ মে) বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের এ রিপোর্ট প্রকাশ করে বিএসটিআই।
সেখানে বিএসটিআই জানায়, ওই ৫২টি প্রতিষ্ঠানকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে।
কিন্তু অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের সংশ্লিষ্ট পণ্যসমূহ জব্দ না করে শুধুমাত্র কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়ে ওইসব নিম্নমাণের পণ্য বাজারে বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে ওইসব পণ্য বাজারে বিক্রিও হচ্ছে।
নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব পণ্য জব্দ বা বাজার থেকে প্রত্যাহারের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে দুই সচিব ও তিন প্রতিষ্ঠান প্রধানের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা ছাড়াও পরীক্ষিত ভেজাল ও নিম্নমানের পণ্যসমূহ প্রত্যাহার, জব্দ এবং সংশ্লিষ্ট ৫২ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কেন আইনানুগ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে না তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।
নিম্নমানের বা ভেজাল পণ্যের বিরুদ্ধে এসব প্রতিষ্ঠানের আইনানুগ প্রক্রিয়ায় ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার রয়েছে। সিসিএস মনে করে, পণ্য জব্দ বা বাজার থেকে প্রত্যাহারে আইন প্রয়োগের সুযোগ থাকার পরও তা না করায় বাজারে ভেজাল ও নিম্নমাণের পণ্য বিক্রির সুযোগ করে দেয়া হয়েছে। এতে ভোক্তারা যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তেমনি সরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতি ভোক্তার আস্থা ও বিশ্বাস নষ্ট হচ্ছে। সে কারণে বিষয়টি জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন।