কারাগারে অগ্নিদগ্ধ এক আইনজীবীর মৃত্যুতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা রিটের শুনানিতে রিটকারীর এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন দুদকের এক আইনজীবী। অর্থাৎ ব্যারিস্টার সায়েদুল হক সুমন রিট করার এখতিয়ার রাখেন কি-না, আইনজীবী হিসেবে আইনগত বৈধতা আছে কি-না তা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে।
হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মঙ্গলবার (৭ মে) এ শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে আজ রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। অন্যদিকে ছিলেন দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোখলেসুর রহমান।
রিটের শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেসুর রহমান এ প্রশ্ন উত্থাপন করে বলেন, রিটকারী মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারের জন্য গঠিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের একজন আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষের প্রসিকিউশন টিমের একজন প্রসিকিউটর হিসেবে তিনি এই মামলা পরিচালনা করার এখতিয়ার রাখেন কি-না। তিনি এই আবেদনে যাদের বিবাদী করেছেন তারা সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দফতরের কর্মকর্তা। ফলে, উনি সরকারের নিয়োগপ্রাপ্ত হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে মামলা করার যৌক্তিকতা খতিয়ে দেখা দরকার।
দুদক আইনজীবী অ্যাডভোকেট সৈয়দ মামুন মাহবুব বলেন, আমি দুদকের আইনজীবী। কিন্ত আমার নিয়োগপত্রে মামলা করার বিষয়ে বিধি নিষেধের কথা উল্লেখ রয়েছে।
রিটকারী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেন, আমি ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর। কিন্ত ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে বা কোনো যুদ্ধাপরাধীর পক্ষে আমি মামলা লড়ছি না। ফলে রিট করতে আইনগত বাধা নেই।
এ পর্যায়ে আদালত বলেন, আপনাকে প্রসিকিউটর হিসেবে যে নিয়োগপত্র দেয়া হয়েছে সেখানে এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে কোন বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ রয়েছে কি-না? রিটকারী বলেন, কোনো বিধি নিষেধ নেই। এরপরই আদালত প্রসিকিউটরের নিয়োগ সংক্রান্ত সরকারের (পত্রটি) আদালতে দাখিল করতে বলেন। পাশাপাশি আইনজীবীর মৃত্যুর ঘটনায় কোন ইউ.ডি (অপমৃত্যু) মামলা হয়েছে কি-না তা জানাতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীকে নির্দেশ দেয়া হয়।
আদালত বলেন, আমরা প্রায় দেখি কিছু লোক প্রচারের জন্য জনস্বার্থমূলক মামলা করে থাকে। রুল বা অন্তর্বর্তীকালীন আদেশের প্রাপ্তির পর টিভিতে গিয়ে বক্তব্য দিতে দেখা যায়। শুনানির জন্য দিন ধার্য করলেও তারা বলে এ সপ্তাহে নয়, পরের সপ্তাহ এভাবেই সময় নিয়ে নেয়। আপনি তো সে রকম আইনজীবী নন। এই বলে আদালত প্রসিকিউটির সায়েদুল হক সুমনের (জনস্বার্থ মামলা লড়ার) কাজের প্রশংসা করেন। পরে মামলার শুনানির জন্য বুধবার (৮ মে) দিন ঠিক করেন আদালত।
গত ২৬ মার্চ মানহানির একটি মামলায় পঞ্চগড় জেলা কারাগারে পাঠানো হয় আইনজীবী পলাশ কুমার রায়কে। এক মাস পর ২৬ এপ্রিল কারা হাসপাতালের বাথরুমে অগ্নিদগ্ধ হন ওই আইনজীবী। পরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গত ৩০ এপ্রিল দুপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুমন। সূত্র – জাগো নিউজ
বিশেষ দ্রষ্টব্য : গতকাল রাতে ‘কারাগারে দগ্ধ আইনজীবীর মৃত্যু: রিটকারী এখতিয়ার নিয়ে প্রশ্ন’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদে আংশিক তথ্যগত ভুল থাকায় সংবাদটি সংশোধন পূর্বক পুনরায় প্রকাশ করা হল।