‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায় পুনর্বিবেচনার (রিভিউ) আবেদন নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ৫ হাজার ৫৩৭ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি জানেন না, তাদের কত বছর সাজা খাটতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার (৯ মে) প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল আদালতকে এমন তথ্য দেন সংশ্লিষ্ট মামলার আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ। অন্যদিকে, আসামির রিভিউ আবেদনের পক্ষে ছিলেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন ও আইনজীবী শিশির মনির।
শুনানিকালে রিভিউকারী আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন আদালতকে বলেন, ‘বর্তমানে ৫ হাজার ৫৩৭ জন যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি কারাগারে রয়েছেন। তবে তারা জানেন না, তাদের কত বছর কারাগারে থাকতে হবে।’
শুনানির একপর্যায়ে সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার শফিক আহমেদ আদালতকে বলেন, ‘বিষয়টি দ্রুত সুরাহা হওয়া প্রয়োজন।’
পরে যাবজ্জীবন মানে কত বছর সাজা, সে বিষয়ে রিভিউ শুনানির জন্য আগামী বৃহস্পতিবার (১৬ মে) মামলার শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করেন আপিল বিভাগ।
প্রসঙ্গত, ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর একটি হত্যা মামলায় দুই আসামি আতাউর মৃধা ওরফে আতাউর ও আনোয়ার হোসেনকে মৃত্যুদণ্ড দেন বিচারিক আদালত। এরপর ওই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিদের আপিল ও মৃত্যুদণ্ড অনুমোদনের বিষয়ে ডেথ রেফারেন্স (মৃত্যুদণ্ড অনুমোদন) শুনানির জন্য হাইকোর্টে আসে। এসব আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর হাইকোর্টের রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখা হয়।
হাইকোর্টের সেই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আপিল বিভাগে আপিল আবেদন জানান। ২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেওয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একইসঙ্গে আদালত ‘যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাস’সহ সাত দফা অভিমত দেন। এরপর আপিলের ওই রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করলে এ বিষয়ে বিজ্ঞ আইনজীবীদের মতামত শুনতে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন আপিল বিভাগ। এছাড়াও অ্যামিকাস কিউরির মতামত ও রিভিউ শুনানির জন্য আগামী ১৬ মে দিন ধার্য করেন আপিল আদালত।