বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন বলে মন্তব্য করে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য যা করতে হয়, নির্বাহী বিভাগ সেই ব্যাপারে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে।’
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে শনিবার (১৮ মে) ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এই মন্তব্য করেন।
বিচারাধীন বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া বিবৃতি প্রতিবন্ধকতা হবে কিনা জানতে চাইলে আনিসুল হক বলেন, ‘প্রধান বিচারপতি বা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ যেটা বলেছেন, সেটা হলো, বিচারাধীন কোনও মামলা সম্পর্কে ব্যক্তিগত অভিমত দিয়ে পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা যাবে না। বিচারাধীন বিষয়ে কোনও কথা না বললে বিচারকদের ওপর কিন্তু কোনও প্রভাব পড়ে না। সে জন্যই প্রধান বিচারপতি ও আপিল বিভাগের বিচারপতিরা ওই বিৃবতি দিয়েছেন।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার মনে হয় না, আপনারা যে রিপোর্ট করেন তা বন্ধ করতে ওই বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। যেটা তারা (আপিল বিভাগের বিচারপতিরা) বলেছেন, মামলাটি পেন্ডিং কিন্তু বিচার কাজ শেষ হয়নি, এমতাবস্থায় ওই বিচার নিয়ে রিপোর্ট করলে তা আদালতের ওপর প্রভাব ফেলবে।’
হাইকোর্টের একটি বেঞ্চের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে এবং সেটা ওপেন কোর্টেই সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এবং বারের সভাপতি বলেছেন রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি পাঠাতে। কিন্তু কথা হলো এখন ষোড়শ সংশোধনী নেই এবং সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলও নেই, এক্ষেত্রে যেসব বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে তা কীভাবে নিষ্পত্তি হবে- জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বিচার বিভাগ স্বাধীন। বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষা করার জন্য যা করতে হয়, নির্বাহী বিভাগ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরকার সেই ব্যাপারে সকল সহযোগিতা দেবে।’
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার (১৬মে) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে কোনো খবর বা টিভি স্ক্রল প্রচার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতি দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত। এ অবস্থায়, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এরপর আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর হস্তক্ষেপ বলে পাল্টা বিবৃতি দেয়া হয়। এর পর আজ আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেয়া বিবৃতির ব্যাখ্যা দেন তিনি।
এদিকে, সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের এই বিজ্ঞপ্তির প্রতিবাদে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে) ও ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) পৃথক পৃথক বিবৃতি দিয়েছে।