আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, ‘উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে রিপোর্টিংয়ের ক্ষেত্রে কোনও বাধা আছে বলে আমি মনে করি না। রিপোর্টিং করতে নিষেধ করেছে এ ধরনের কোনও প্রজ্ঞাপন হাইকোর্ট দিয়েছে বলে আমার মনে হয় না। উচ্চ আদালতে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে কোনও আপত্তি নেই, তবে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে ব্যক্তিগত মতামত দেওয়ার ক্ষেত্রে আপত্তি আছে বলে আমার মনে হয়।’
আজ রোববার (১৯ মে) হাইকোর্টের রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত সম্প্রতি জারি করা প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। সচিবালয়ের আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ইউরোপীয় ইউননিয়নভুক্ত দেশগুলোর রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আইনমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তাতে চলমান মামলার বিষয়ে রিপোর্টিং করার ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ জারি করা হয়নি। কিন্তু চলমান মামলা সম্পর্কে ব্যক্তিগত মতামত দিলে বিচারপতিরা এক ধরনের চাপ অনুভব করেন। কারণ, ব্যক্তিগত অভিমত দিলে তা এক ধরনের মিডিয়া ট্রায়াল হয়ে যায়। এ কারণেই তারা চলমান মামলা সম্পর্কে ব্যক্তিগত মতামত না দেওয়ার জন্য ওই প্রজ্ঞাপন জারি করেছেন।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমার মনে হয় আপনরা যদি এই প্রজ্ঞাপন সম্পর্কে আপিল বিভাগের কাছেও জানতে চান তাহলে আপিল বিভাগও হয়তো এই মতামতই দেবেন। ’
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার (১৬ মে) সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিচারাধীন মামলার বিষয়ে কোনো খবর বা টিভি স্ক্রল প্রচার করা থেকে বিরত থাকার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানিয়ে বিবৃতি দেয়া হয়।
সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘ইদানিং লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোনো কোনো ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া তাদের চ্যানেলে এবং কোনো কোনো প্রিন্ট মিডিয়া তাদের পত্রিকায় বিচারাধীন মামলা সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করছে, যা একেবারেই অনভিপ্রেত। এ অবস্থায়, বিচারাধীন কোনো বিষয়ে সংবাদ পরিবেশন/স্ক্রল করা থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’
এরপর আইন, বিচার ও সংবিধান বিষয়ক সাংবাদিকদের সংগঠনের পক্ষ থেকে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া বিবৃতি স্বাধীন সাংবাদিকতার উপর হস্তক্ষেপ বলে পাল্টা বিবৃতি দেয়া হয়। এর পর আজ আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের মুখোমুখি হলে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের দেয়া বিবৃতির ব্যাখ্যা দেন তিনি।