দুদক

প্রকৌশলীর গৃহিণী স্ত্রীর সাড়ে ৩ কোটি টাকার সম্পদ, মামলা করল দুদক

তিনি পেশায় গৃহিণী। তাঁর সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ৫১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬ টাকা। অথচ দৃশ্যমান আয়ের উৎস বলতে তাঁর কিছু নেই। যতটুকু আছে তা হল, তাঁর স্বামী সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত প্রকৌশলী।

দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) বলছে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের স্ত্রী নাছিমা জামান অবৈধভাবে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন।

দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, রাজধানীর ইন্দিরা রোডে ৬ তলা বাড়ি রয়েছে নাছিমার। প্রতি তলার আয়তন ২০১৫ বর্গফুট এবং চিলেকোঠা ৫৫৮ বর্গফুট। এ ছাড়া কেরানীগঞ্জের আলগী মৌজায় ৩১ শতাংশ নাল জমি, বসুন্ধরা সিটির লেভেল ৫ এ ১৬১ বর্গফুটের দোকান, রাজধানীর নিকুঞ্জ এলাকায় ৩ কাঠা জমিতে অত্যাধুনিক ডুপ্লেক্স বাড়ি, উত্তরার তৃতীয় পর্বে ৪ শতাংশ জমি রয়েছে নাছিমার নামে। এর বাইরে অত্যাধুনিক টয়োটা গাড়ি, আবদুল্লাহপুরে তাসিন সিএনজি ফিলিং স্টেশনে পুঁজি বিনিয়োগ করেছেন এই নারী।

এসব অনুসন্ধানের ভিত্তিতে নাছিমা জামানের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। বুধবার (২৯ মে) রাজধানীর রমনা থানায় মামলাটি করেন দুদকের সহকারী পরিচালক মাহবুবুল আলম।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের স্ত্রী নাছিমা জামান অবৈধভাবে এসব সম্পদের মালিক হয়েছেন। দুদকের অনুসন্ধানে দেখা গেছে, তাঁর সম্পদের পরিমাণ তিন কোটি ৫১ লাখ ৫৩ হাজার ৮৬ টাকা। এর মধ্যে দুই কোটি ৪ লাখ ৪ হাজার ১২৮ টাকার সম্পদ অবৈধভাবে অর্জন করেছেন। এ ছাড়া দুদকে জমা দেওয়া সম্পদ বিবরণীতে এক কোটি ৭৮ লাখ ৩৩ হাজার ৯ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেছেন।

এদিকে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের বিরুদ্ধেও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে আলাদা আরেকটি মামলা করেছে দুদক। রমনা থানায় করা ওই মামলাটিও করেছেন দুদকের একই কর্মকর্তা।

মামলার এজাহারে বলা হয়, কামরুজ্জামান ১৯৮০ সালে উপসহকারী প্রকৌশলী হিসেবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরে যোগ দেন। তারপর নিয়মিত পদোন্নতির মাধ্যমে ২০১৬ সালে নির্বাহী প্রকৌশলী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। একই বছরে তিনি অবসরে যান।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে, কামরুজ্জামান ৬৪ লাখ ৩৫ হাজার ৫৯২ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এ ছাড়া তিনি ৩০ লাখ ৪২ হাজার ১১৬ টাকার সম্পদের তথ্য গোপন করেন।